শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানির ক্ষিপ্রতা এখনও কমেনি। বন্ধ হয়নি বৃষ্টিপাত। এরই মধ্যে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্যার পানি ফেনী থেকে ফাজিলপুর পর্যন্ত রেললাইনে উঠে যাওয়া রেল যোগযোগ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম অংশে ও ফেনীর ফাজিলপুরে ঢাকা-চট্টগাম মহাসড়কে পানি উঠায় ভোর থেকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
যতোই সময় যাচ্ছে ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতি ততোই ভয়ঙ্কর হচ্ছে। পরশুরাম ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার পর গতকাল রাত থেকে ফেনী শহর, ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলায়ও ক্ষিপ্রতার সহিত পানি প্রবেশ করছে। সদর উপজেলার ফাজিলপুর, মোটবি, ফরাদনগর ইউনিয়নে বন্যার পানির তীব্রতায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে। অন্য সকল ইউনিয়নেও রয়েছে পানি।
সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিলেও কতজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তা জানা যায়নি। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু মৃত্যুর কথা শুনা গেলেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এখনাকার বাসিন্দাদের স্বজনদের আহাজারি বেড়েছে। তারা গত বুধবার বিকাল থেকে হেলিকপ্টারের সহযোগিতা চেয়ে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পানিবন্দিদের বর্তমান অবস্থান জানিয়ে পোস্ট দিয়ে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের করুণা চাচ্ছেন। বাস্তবতা হলো কাদের উদ্ধার করা গেছে, কারা এখনও পানিবন্দি রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার প্রায় ঘরবাড়ির ডুবে গেছি। এসব এলাকার বাজারের পাশে উঁচু বাড়ি ঘর ছাড়া প্রায় বাড়ি ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। একতলা ভবনে ছাদ ও ডুবে গেছে পানিতে।
ফেনী থেকে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় প্রবেশের কোন সুযোগ নেই সাধারণ মানুষের। ফুলগাজীর প্রবেশমুখ বন্ধুয়া থেকে প্রধান সড়কে কোমর পানি থাকায় ভেতরের প্রবেশ করার সুযোগ নেই। ফুলগাজীর উপজেলার পরই পরশুরাম উপজেলা। তার পাশেই ছাগলনাইয়া উপজেলা। ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা পুরোই বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। এই দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ কি পরিস্থিতে আছে কেউ সঠিকভাবে জানাতে পারছে না।
ছাগলনাইয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে আছে। তিনটি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামের মানুষ পুরোপুরি পানিবন্দি। অন্যা ইউনিয়নের বাসিন্দারাও রয়েছে পানিবন্দি। এই তিন উপজেলায় গতকাল ভোর থেকেই বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। কে কোথায় কিভাবে আছে তা জানারও সুযোগ নেই। শহরের কিছু এলাকা ছাড়া পুরো জেলাজুড়ে গতকাল থেকে নেই বিদ্যুৎ। পুরো শহর তুলিয়ে আছে হাঁটু ও কোমর পানির নিচে।