শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের আইন বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের একক ক্ষমতা ফিরে পেলো বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গতকাল এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে। গেজেটে বিইআরসি আইনে ৩৪ (ক) ধারা সংযোজন করে নির্বাহী আদেশে দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়া হয় নির্বাহী বিভাগকে। গেজেটে ৩৪ (ক) ধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে।
২০০৩ সালে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন পাসের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও আধাবিচারিক স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠিত হয়। গ্যাস ও বিদ্যুতের বিতরণ কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতা এবং ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত বিইআরসি মূলত ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে। এ পর্যন্ত ১৩টি প্রবিধানমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আর ১২টি প্রবিধানমালা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অনুমোদনের অপেক্ষায় ঝুলিয়ে রাখা রয়েছে। আইনে সকল ধরনের জ্বালানির দাম নির্ধারণের এখতিয়ার দেয়া প্রবিধানমালা ঝুলে থাকায় শুধুমাত্র গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করে আসছিল বিইআরসি। ২০২৩ সালে হঠাৎ করেই আইন সংশোধন করে নির্বাহী আদেশে দাম সমন্বয় (কম/বেশি) করার বিধান যুক্ত করা হয়।
তারপর থেকে নির্বাহী আদেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করায় কার্যত বেকার হয়ে পড়ে আধা-বিচারিক প্রতিষ্ঠানটি। বিইআরসি গণশুনানির মাধ্যমে দাম চূড়ান্ত করায় ইউটিলিটিগুলোর নানা রকম অসংগতি সামনে আসতো। এতে করে তাদের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়, দিনে দিনে একটি কালচারে পরিণত হতে যাচ্ছিল। সেই প্রক্রিয়াকে গলাটিপে হত্যা করে আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাহী আদেশে দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাব ও অন্যরা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম দিনেই নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সমন্বয়ের বিপক্ষে মত দেন। সেদিন ১৮ই আগস্ট বলেছিলেন, আপাতত নির্বাহী আদেশে আর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হবে না। দাম সমন্বয় করতে হলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে পাঠানো হবে।