প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে না গিয়ে ফিরে যাওয়া নিয়ে যা বললেন কর্নেল অলি

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে অংশ নিতে গিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় নাম না থাকায় ফিরে গেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমি থেকে ফেরত যান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এলডিপি আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল (অব.) অলি বলেন, বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একটা বৈঠক হয়েছিল। যে কোনো কারণেই হোক আমরা সেখানে উপস্থিত থাকতে পারিনি। যার জন্য সরকারের একজন উপদেষ্টা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এবং তিনি বলেছেন, আগামীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। সুতরাং এটা নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।

এদিকে বৈঠকে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় অলি আহমদের নাম না থাকা নিয়ে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি মন্তব্য করেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এলডিপি চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ অলি আহমদ বীর বিক্রম গতকাল ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সম্মানজনকভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি না হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। ভবিষ্যতে এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও আন্তরিক হবেন আমরা আশা করি।’

এদিকে একই কারণে ফেরত যেতে হয়েছে এলডিপির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদকেও। এছাড়া সর্বদলীয় এই বৈঠকে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই বৈঠক শেষ হয়। তবে বৈঠকে আওয়ামী বা সমমনা কোনো দলই আমন্ত্রণ পায়নি।

ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে অপপ্রচার, আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে ন্যাক্কারজনক হামলা এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের গুজব, এই তিনটি এজেন্ডায় করণীয় ঠিক করতে এবং জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের অংশ হিসেবেই প্রধান উপদেষ্টা সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘একটি মহল দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনতে চায়।’

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেন উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনীতিক দলের নেতারা। আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা বাদে আজকের বৈঠকে সব রাজনৈতিক দল উপস্থিত ছিলো। নানান পথ-মত ও আদর্শের ভিন্নতা ছিলো। কিন্তু সবাই একত্রে বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা এবং মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ এবং ঐক্যমত জানিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আর দুর্বল ও নতজানু ভাবার অবকাশ নেই। দেশ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে দেশের সব রাজনৈতিক দল ঐক‍্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেছে।’

Advertisement
পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো একমত। অতিদ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে হবে। মানুষ নির্বাচনমুখী হলে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।’

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণকে ব্যর্থ করার জন্য ভারত অপপ্রয়াস ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। বাংলাদেশ ভালো না থাকলে ভারতও ভালো থাকবে না।’

তবে বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে ব্যাপকভাবে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান জামায়াত আমির।

Related posts

Leave a Comment