মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার নাওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থিত সরকারি ১টি কাঁঠাল গাছ উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, উপজেলা প্রশাসনের অনুমোদন ও টেন্ডার পত্র ছাড়াই বিক্রির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ করায় সাংবাদিক তরিকুল ইসলামকে প্রাণ নাশের হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর ও সাংবাদিকতার স্বাদ মিটিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন।
গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের গড়াগছ গ্রামের আনিছুরের বাড়ীর সামনে ১৫গজ দক্ষিণে এই ঘটনাটি ঘটান ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের নাওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থিত সরকারি বড় ১টি কাঁঠাল গাছ উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমোদন ও টেন্ডার পত্র ছাড়াই লোক নিয়ে কর্তন করে সকলের দৃষ্টির অগোচরে উহা বিক্রয় করে টাকা আত্মসাত করেন। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিক তরিকুল পেশাগত দায়িত্ব পালনে গত রোববার (৬আগস্ট) বিদ্যালয়ের মাঠে সরেজমিনে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে উপস্থিত লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তাঁর মোবাইলে গাছ কাটার পরবর্তী স্থির চিত্র ধারণ করেন। এরপর সাংবাদিক তরিকুল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট গাছ কাটার বিষয়ে আইনগত ভিত্তি/মতামত জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন কোন সদোত্তর দিতে পারেননি বরং সাংবাদিক তরিকুলকে বলেন, গাছ কাটছি তো কি হয়েছে? আপনি কি করতে পারবেন করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিক তরিকুল সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ও ইউএনও মহোদয়ের মতামত পর্যলোচনায় বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং দৈনিক পত্রিকায়
“পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় স্কুল মাঠের গাছ বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক” শিরোনামে নিউজ প্রদান করেন এবং তাহা প্রকাশ হয়। নিউজের জের ধরেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক তরিকুলকে রাস্তার গতিরোধ করে তাকে প্রাণ নাশের হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর ও
সাংবাদিকতার স্বাদ মিটিয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি সরেজমিনে গিয়ে তথ্য উপাত্ত সাপেক্ষে ওই বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির সংবাদ করায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন তাকে গতিরোধ করে মারমুখী আচরণ শুরু করেন, তাঁর পড়নের কাপড় চোপড় টানা হেচরা করেন এবং তাঁর মাথায় ও দুই হাতের বাহুতে এলোপাতারী কিল ঘুষি মেরে নীলা ফুলা জখম করেন। সে নিজেকে রক্ষার জন্য হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করলে প্রধান শিক্ষক তাহার পড়নের চামড়ার জুতা খুলিয়া সাংবাদিক তরিকুলের মাথায় এলোপাতারী মারতে থাকেন এবং প্রাণ
নাশের হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও সাংবাদিকতার স্বাদ মিটিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন এবং ওই বিদ্যালয় প্রধানের হুমকির ভয়-ভীতিতে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন।
এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বুধবার (১৬ আগস্ট) বক্তব্য নেয়ার জন্য মুঠোফোনে কল করা হলে কলটি রিসিভ করে বলেন, এখন ব্যস্ত আছি অতঃপর বৃহস্পতিবার রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪টা থেকে ৫টা নাগাদ সহকর্মীগণ বক্তব্য নেওয়ার জন্য পুণরায় মুঠোফোনে কল করলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান
শিক্ষকের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে জানা গেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে এ বিষয়ে কেউ অবগত করেননি, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা
গ্রহন করা হবে, কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক। অভিযোগের প্রক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’