শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
ভারতের কাছে হোয়াইটওয়াশ হবার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে জয়ের ধারায় ফেরার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেটে স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।
এবারের বাংলাদেশ সফরে আসা দক্ষিণ আফ্রিকার অনভিজ্ঞ হওয়ায় জয় দিয়ে সিরিজ শুরুর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস টাইগাররা। তেম্বা বাভুমা ছাড়া বর্তমান দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোন খেলোয়াড়ের বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই।
আবার বাংলাদেশ সফরে দলের সাথে থাকলেও ইনজুরির কারনে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতে পারবেন না দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়মিত অধিনায়ক বাভুমা। তার অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দিবেন আইডেন মার্করাম।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৪টি টেস্টে মুখোমুখি হলেও কোন ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১২টিতে হার এবং দু’টি টেস্ট ম্যাচ ড্র করেছে টাইগাররা।
২০১৫ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশে সফরে খেলা দু’টি টেস্টই ড্র করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃষ্টি এবং বৈরি আবহাওয়ার কারনে সমতায় সিরিজ শেষ করেছিলো দু’দল। এরপর থেকে ঘরের মাঠে শক্তিশালী দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মতো বড়-বড় দলের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা।
সাম্প্রতিক ঘরের মাঠের রেকর্ডের ভিত্তিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারাতে বিশ্বাস যোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। এছাড়াও গত ১০ বছরে উপমহাদেশে কোন টেস্ট জিততে পারেনি প্রোটিয়ারা।
বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমরা জিততে পারিনি। ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় এবারের আমাদের সামনে দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিজ্ঞ না হলেও তারা খুবই ভালো দল বলে আমি মনে করি। আমরা পাকিস্তানে ভালো করেছি, কিন্তু ভারতে ভালো করতে পারিনি। আমি মনে করি, আমাদের টেস্ট দল ভালো অবস্থায় আছে। আমরা মতে, এটি ভালো টেস্ট ম্যাচ হবে যদি আমরা সঠিকভাবে পরিকল্পনাগুলো কাজে লাগাতে পারি। প্রতিটি সেশনেই আধিপত্য বিস্তার করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
মিরপুরের পিচ সবসময়ই স্পিনারদের পক্ষে থাকে। তাই স্পিন সহায়ক উইকেটে স্পিনারদের সামলাতে সব সময়ই হিমশিম খেতে হয় উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোকে। এছাড়া কখনওই স্পিনারদের ভাল খেলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। যা বাংলাদেশের সুযোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শান্ত বলেন, ‘সাধারণত মিরপুরে বড় ভূমিকা রাখে স্পিনাররা। তাদের বেশি কিছু করার চেষ্টা করতে হবে না। তারা নিজেদের দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করতে পারলে দলের জন্যই ভালো হবে। যথার্থ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের ২০ উইকেট নেওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে, তাহলেই সহজ হয়ে যাবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শুরুর মাত্র কয়েকদিন আগে সাকিব আল হাসান ইস্যু এবং চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করার মতো ঘটনা দলের প্রস্তুতিতে প্রভাব ফেলবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। কিন্তু শান্ত জানান, দলের পুরো মনোযোগ ম্যাচের দিকেই রয়েছে।
শান্ত বলেন, ‘আমরা বাইরের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছি না। আমাদের সমস্ত মনোযোগ ম্যাচকে ঘিরে। আমরা এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে পারিনি। তাই এটি আমাদের দলের জন্য ভালো সুযোগ। কারন আমরা ঘরের মাঠে খেলছি।’
বাংলাদেশ দল :-
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস (উইকেটরক্ষক), জাকের আলি অনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান , তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও হাসান মুরাদ।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল :-
আইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহ্যাম, ম্যাথু ব্রিটস্কি, টনি ডি জর্জি, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, লুঙ্গি এনগিডি, কেশভ মহারাজ, উইয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুথুসামি, ড্যান পিটারসন, ড্যান পিয়েট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন ও কাইল ভেরেইনি।