শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ স্নেক আইল্যান্ড নামের দ্বীপটি ছেড়ে গেছে দেশটিতে হামলা চালানো রুশ বাহিনী। রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রথম দিকে তারা কৃষ্ণসাগরের বুকে স্নেক আইল্যান্ড নামে যে ক্ষুদ্র দ্বীপটি দখল করে নিয়েছিল- সেটি থেকে তারা রুশ সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
দ্বীপটির ওপর ইউক্রেনের প্রচণ্ড আক্রমণের পর রাশিয়া এ কথা জানায়।
মস্কো বলেছে, স্নেক আইল্যান্ড থেকে তাদের এই প্রত্যাহার হচ্ছে একটা ‘শুভেচ্ছাসূচক পদক্ষেপ’এবং এর মাধ্যমে তারা দেখাতে চাইছে যে ইউক্রেন থেকে কৃষিপণ্য পরিবহনের পথে রাশিয়া কোন বাধা সৃষ্টি করছে না।
কিন্তু ইউক্রেনের সরকার বলছে, ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান দিয়ে আক্রমণ চালানো হলে রুশ সৈন্যরা তড়িঘড়ি করে দুটি স্পিডবোটে চেপে দ্বীপটি ছেড়ে চলে যায়।
রাশিয়ার এ পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো যখন ইউক্রেন দ্বীপটির ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান দিয়ে প্রচণ্ড আক্রমণ চালাচ্ছিল। বুধবারের উপগ্রহ চিত্রে দ্বীপটি থেকে ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠতে দেখা যায়
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রত্যাহারের মধ্যে দিয়ে রাশিয়া স্বীকার করে নিচ্ছে যে ইউক্রেনের হাতে এখন যথেষ্ট সংখ্যক দূরপাল্লার রকেট আছে- যা তাদের এই দ্বীপে রুশ অবস্থানগুলোর ওপর আক্রমণ চালানোর কাজে লেগেছে।
ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিজয়
ইউক্রেনে রুশ অভিযানের একেবারে শুরুর দিকে রাশিয়া এ দ্বীপটি দখল করেছিল। তখন থেকেই এই দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণের জন্য দু-পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছিল।
দ্বীপটির ওপর ইউক্রেন নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে থাকলেও এক পর্যায়ে রাশিয়া এ দ্বীপটির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ সংহত করেছিল। তারা সেখানে সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছিল- যা ইউক্রেনের বাহিনী ও যুদ্ধবিমানের জন্য সার্বক্ষণিক হুমকি হয়ে উঠেছিল। তবে ইউক্রেনীয় বাহিনীও যুদ্ধবিমান, কামান ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছিল।
ফলে রাশিয়ার জন্য দ্বীপটির ওপর দখল কায়েম রাখা ক্রমশঃ কঠিন হয়ে পড়ছিল বলে বিশ্লেষকরা বলছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ড স্নেক আইল্যান্ড ছেড়ে রুশ সৈন্যদের চলে যাবার কথা ঘোষণা করে। তবে রাশিয়া তাদের সৈন্যদের প্রত্যাহারের কথা স্বীকার করলেও একে ‘শুভেচ্ছাসূচক’ বলে বর্ণনা করে এক ভিন্ন বিবরণ দেয়।
বিবিসির সংবাদদাতা বলেন, প্রকৃত ঘটনা যাই হোক, স্নেক আইল্যান্ড পুনর্দখল ইউক্রেনের জন্য এক বড় বিজয়।
বিবিসির জো ইনউড বলছেন, এর ফলে কৃষ্ণসাগর যদি আবার খাদ্য রফতানির জন্য নিরাপদ হয়ে ওঠার দিনটি এগিয়ে আসে- তাহলে এ বিজয় হতে পারে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বসম্পন্ন ঘটনা।
সূত্র: বিবিসি বাংলা