আকাশ মনিঃ ছোটদের পত্রিকা কানামাছি’র ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল ২৮ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, বিকেল ৪টায়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে শিশুসাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। কবি ও লেখকদের এ মিলনমেলায় সেমিনার, শিশুসাহিত্য পুরস্কার ও ছড়া-কবিতা পাঠের আয়োজন করা হয়েছে। খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি, কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক শিশুসাহিত্যিক আনজীর লিটন, শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন, আসলাম সানী, সুজন বড়ুয়া, রহীম শাহ, আহমেদ জসিম, রমজান মাহমুদ কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদ,…
Read MoreCategory: কদমকলির আসর
কদমকলির আসর
আড়ি
-কাজী মোঃ হাসান খুকুমণি- রাগ করেছে ভারি, কয়না কথা সবার সাথে আড়ি। খুকুমণি- এলো খোঁপার ফুল, ছিঁড়ে ফেলে ছোট্ট কানের দুল। খুকুমণি- বকুল ফুলের মালা, খুলে ফেলে নাকের নোলক বালা। খুকুমণি- পায়ের নুপুর খানি, ভেঙ্গে ফেলে আছড়ে আঘাত হানি। খুকুমণি- মান করেছে ভারি, পরবে না আর আকাশ বরণ শাড়ী। খুকুমণি- পণ করেছে, ভবে বৌ হবেনা যতই বলুক সবে!
Read Moreরঞ্জুর পাঠশালা
-কাজী মােঃ হাসান নতুন বাড়িতে এসেই ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি সামাজিক কাজে জড়িয়ে গেলেন আব্বু। প্রথম দিকে মসজিদ বানানো, ইয়ং ছেলেদের নিয়ে ক্লাব গঠন করা, পরে নিয়মিত ভাবে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে নেতৃত্ব দেয়াও প্রায় প্রতিদিনের রুটিনে পরিণত হলো । নির্বাচন আসতেই এলাকার লোকজন তাঁকে ধরে বসলেন- প্রার্থী হওয়ার জন্য। প্রথম দিকে আব্বু পেশাগত কারণে কিছুতেই রাজি ছিলেন না। এক সময় সবার চাপের রাজি হতেই হলো। নির্বাচনে দাঁড়ালেন তিনি। তাঁর প্রতিদ্বন্দী একজন প্রাক্তন স্কুল মাষ্টার। খুব প্রতাপশালী। এক সময় স্থানীয় অত্যাচারি জমিদারদের বিরুদ্ধে তাঁর কন্ঠস্বর ছিলো আগ্নেগিরিরর মতো সোচ্চার, প্রতিবাদ মুখর। তাঁর…
Read Moreসাপের খেলা
-কাজী মোঃ হাসান এতোদিন রঞ্জুদের বাসাটা ছিলো থানার দক্ষিণ দিকে। পরের বৎসরই রঞ্জুর আব্বু থানার উত্তর দিকে বাড়ি কিনে চলে আসেন সেখানে। জায়গাটা থানার এক কিলোমিটারের মধ্যে। জমিদারদের বিশাল জায়গা। বাড়ির আশে-পাশে প্রায় বিশ বিঘা জমি। সবটাই কেনেন তিনি। এর মধ্যে আছে দুটি পুকুর, একটি দিঘী। দিঘীটার পশ্চিম পাশে বিরাট ঘাটলা। তার চারপাশ ঘিরে বউইকাঁটা ভরা ছনক্ষেত। ছনগুলো বড় হয়ে উপচে পড়েছে দিঘীর পানিতে। এ ছাড়া এখানে সেখানে ইকরছোবার গোছা, ছোট ছোট ঝোঁপঝাড় এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দু’একটা কড়ই ও তালগাছ। আব্বু বাড়িটা কেনার পরপরই দাদা-দাদীকে নিয়ে আসেন আগের বাড়ি…
Read Moreফাঁদ
-কাজী মোঃ হাসান মিয়াজদ্দিন এবং তার ভাই সাহাজদ্দিনও রঞ্জুর ভালো বন্ধু। তাদের বাবা একজন পাখি শিকারী। তাদের বাড়িতে গেলেই দেখা যায় কোড়া, ডাহুক, বক, বালিহাঁস, রাজহাঁস, চিনাহাঁসের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে সারা উঠোন জুড়ে। এ ছাড়া খাঁচায় এক জোড়া ঘুঘু এবং কাঠের খোপে কবুতরের ঝাঁক। এক একটার এক এক নাম। গিরিবাজ, জালালী আরো কতো কী! অত নাম রঞ্জুর মনে থাকে না। সকালে খাঁচার ঢাকনা খুলে দিলেই গিরিবাজ কবুতরগুলো পাখা ঝাঁপটিয়ে ফুরফুর করে উড়ে যায় আকাশে। কোনটা আবার ঘরের চালে, গাছের ডালে অথবা বাঁশ দিয়ে তৈরী উচু মাচানের উপর গিয়ে বসে। উঠোনেও…
Read Moreফড়িং শিকারে রঞ্জু
-কাজী মোঃ হাসান শীতের এ সময়টায় চকের পর চক জুড়ে শুধু রবি শস্য। মূলা, মটর, বুট, সরিষা, কলই, ডাল- কী নেই মাঠে। তবে বেশী ভাগই সরিয়া। সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে আছে সারা মাঠ। কোন কোন ক্ষেতে সূর্র্র্র্যমূখি। কোন ক্ষেতে তিশি। ফুল ফুটলেই মাঠে মাঠে ভ্রমর, মৌমাছি, ফড়িং সহ হাজার রঙ্গের প্রজাপতির উৎসব। একদিন বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে সরিষা ফুল দেখতে গেলো রঞ্জু। হলদে রঙ্গেও ফুলগুলো দেখতে অসম্ভব সুন্দর। গায়ে হাত দিয়ে আদর করতে ইচ্ছে করে। ফুলের গন্ধ নিতে গেলে পরাগরেণু নাকের ডগায় লাগবেই। তারপরও ভালো লাগে গন্ধ নিতে। ফুলগুলো হালকা বাতাসে…
Read Moreঘুড্ডি
-কাজী মোঃ হাসান কেমন করে যেন এই হযরত আলীর সাথেই রঞ্জুর ভীষণ খাতির হয়ে যায়। হযরত আলীও তাকে খাস মুরিদ বানিয়ে ফেলে। মনের অজান্তেই দু’জনের সম্পর্কটা গিয়ে দাঁড়ায় কাকা-ভাতিজায়। হেমন্তের শেষ। শীতের পদধ্বনি সবদিকে। প্রায় প্রতিদিনই ভোর রাতের দিকে কায়াশা পড়ছে। মাঝে মাঝে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে সব এলাকা। তখন কুয়াশার ফাঁক দিয়ে ঝোঁপের মধ্যে টিপটিপ করে জ্বলতে থাকা জোনাকীর আলো ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না। এমনকি, গাছপালা পর্যন্ত আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা যায় না। সকালে ঘুম থেকে উঠলেই দেখা যায়- গাছের পাতা বা ঘাসের ডগায় ঘামের মতো ফোঁটা…
Read Moreসাদা ঘোড়া
-কাজী মোঃ হাসান কয়েক দিন পর। আব্বুর কাছে মিষ্টি খাওয়ার বায়না ধরে দু’ভাই। কিন্তু বায়না ধরলেই তো আর হয় না, বাড়িতে মিষ্টি কোথায়? আগে বাজার থেকে আনতে হবে, তারপর মিষ্টি খাওয়া। তাই পরদিনই রঞ্জু আব্বুর সাইকেলের সামনের হেন্ডেলে চড়ে বাজারে গেলো মিষ্টি কিনতে। বাজারে মহাদেব ঘোষের মিষ্টিই সেরা। দোকানে ঢুকতেই এক প্লেট মিষ্টি এনে দিলেন মহাদেব ঘোষ নিজে। রঞ্জু এক বসাতেই টপাটপ গিলে ফেলে তিনটা রসগোল্লা। আর এতেই পেট ভরে একধম ঠাসা। মহাদেব ঘোষ আরও কয়েকটা চমচম ও সন্দেশ এনে দিলেন। কিন্তু রঞ্জুর পক্ষে আর কিছু খাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবু…
Read Moreজীনের কবলে রঞ্জু
-কাজী মো: হাসান সব বিদায় মূহুর্তই খুব কষ্টের। এতোদিন যাদের সঙ্গে হেসেছে, খেলেছে, সুখ-দুঃখগুলো মিলেমিশে ভাগাভাগি করে উপভোগ করেছে, সেই বন্ধুদের ফেলে রঞ্জুর এই চলে যাওয়াটাও সত্যি খুব কষ্টের। বন্ধুরা অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। রঞ্জু তো নয়-ই, সবার মুখে একটাই কথা- : আবার কবে আসবি? কী করে বলবে সে? রঞ্জু কী জানে, আবার কবে আসবে? পরদিন সকালেই রঞ্জুরা চলে যায় নতুন বাড়িতে। জায়গাটা যে একদম নতুন, এমন নয়! সে বহুবারই এখানে এসেছে। কখনো ঈদ উপলক্ষ্যে, কখনো বা দু’তিন দিনের জন্য বেড়াতে। হয় দাদুর সঙ্গে, নয় আব্বুর সঙ্গে।এখানে বলে…
Read Moreকবর জিয়ারত
-কাজী মোঃ হাসান যাওয়ার আগের দিন আম্মু স্থানীয় কবরস্থানে গেলেন মামার কবর জিয়ারত করতে। এখানে দীর্ঘ তিন বৎসর যাবৎ শুয়ে আছেন রঞ্জুর একমাত্র মামা। মামার মৃত্যু, সে এক করুণ কাহিনী। এই ঘটনাটা শুধু রঞ্জুকেই নয়- বাড়ির সব্বাইকে ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়ে যায়, দুঃখ দেয়, কাঁদায়। একমাত্র সন্তান রঞ্জুর নানু। খুব বড় লোক না হলেও জমিজমা মন্দ ছিলো না। হেসে খেলেই চলে যেতো তাঁদের সংসার। আশ্চর্যের ব্যাপার, রঞ্জুর মামাও চার বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই। আম্মু এবং মামা ছিলেন পিটাপিঠি। তবে মামাই বড়। লেখাপড়া করতেন একই স্কুলে। সারা বৎসর দু’জনে একসঙ্গে ছয়…
Read More