নারায়ণগঞ্জে ভাড়া করা মালবাহী জাহাজ এনে কেটে বিক্রি করলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহাদাত

আনিসুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ভাড়া করে আনা একটি মালবাহী জাহাজ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে—এমন গুরুতর অভিযোগে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি শাহাদাত হোসেনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জাহাজের মালিক রাকেশ শর্মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বিএনপি কর্মী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ দিন ধরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কাদিরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে এইচবি হারুন এন্ড ব্রাদার্স মেঘনা শিপইয়ার্ডে পরিকল্পিতভাবে জাহাজটি কেটে ফেলা হয়।

গ্রেপ্তার নজরুল ইসলাম নোয়াখালির হাতিয়া উপজেলার চরবগুলা গ্রামের বাসিন্দা।

চুক্তির জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে এনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাটাকাটি

অভিযোগে বলা হয়, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ছেলে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি শাহাদাত হোসেন একটি সংগঠিত সিন্ডিকেট দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ‘ডাম্ব বার্জ (ডিবি) নামের জাহাজটি ১ নভেম্বর ৭ লাখ ২০ হাজার টাকায় এক মাসের চুক্তিতে ভাড়া নেন।

কিন্তু মালিককে না জানিয়ে শাহাদাতের নেতৃত্বে জাফর, ইকবাল হোসেন, নজরুল ইসলাম, এমদাদুল হক, জাফর মিয়া, হোসেনসহ ১০–১৫ জনের একটি দল জাহাজটিকে কাদিরগঞ্জ এলাকায় নিয়ে গিয়ে কেটে স্টিলের প্লেট বিক্রি করে দেয়।

মালিক রাকেশ শর্মা জানান, গত রবিবার সকালে তার এক পরিচিত ব্যক্তি ফোনে জাহাজ কাটার বিষয়টি জানালে তিনি রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহাজ কেটে ফেলার সত্যতা পান। এতে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

রফিকুল ইসলামের তালবাহানা, শাহাদাতের ফোন বন্ধ

বাদী রাকেশ অভিযোগ করেন, তাঁদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ মো. জাফরই জাহাজ নেওয়ার পর সিন্ডিকেট করে বিএনপি নেতা শাহাদাতের মাধ্যমে শিপইয়ার্ডে জাহাজ কাটায়। বিষয়টি টের পেয়ে শাহাদাতের বাবা রফিকুল ইসলাম ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও পরে তা তালবাহানায় পরিণত হয়, ফলে বাধ্য হয়ে মামলা করতে হয়।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা শাহাদাত হোসেনের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খুদে বার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া দেননি।

অন্যদিকে তার বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর তিনি জাহাজ কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং মালিক পক্ষের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান বলেন,
মালবাহী জাহাজ কেটে বিক্রির ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে, দায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *