মাদুরোর ‘স্বৈরশাসন’ অবসানের আহ্বান চিলির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চিলির কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হোসে আন্তোনিও কাস্ত মঙ্গলবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ‘স্বৈরশাসন’ অবসানের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়েছেন।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কাস্তের এ ঘোষণার মাধ্যমে কারাকাসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিরোধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আরো একটি আঞ্চলিক মিত্র পেল।

বুয়েনস আইরেস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

রোববারের নির্বাচনে রান-অফে সহজ জয় পাওয়ার পর আর্জেন্টিনা সফরে গিয়ে কাস্ত বলেন, মাদুরোর সরকার উৎখাতে যেকোনো প্রচেষ্টাকে তিনি সমর্থন করবেন।

নির্বাচনী প্রচারে কাস্ত অপরাধ দমন ও উত্তর সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি ৩ লাখেরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দেন, যাদের বেশিরভাগই ভেনেজুয়েলার নাগরিক।

তার জয়ে লাতিন আমেরিকায় ডানপন্থার উত্থান আরও স্পষ্ট হলো। এর আগে আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, হন্ডুরাস, এল সালভাদর ও ইকুয়েডরে ডানপন্থীরা জয়লাভ করেছে।

মঙ্গলবার বুয়েনস আইরেস সফরে কাস্ত বলেন, চিলি নিজে ভেনিজুয়েলায় হস্তক্ষেপ করবে না। তবে কেউ যদি তা করে, তাহলে তা চিলি ও সমগ্র লাতিন আমেরিকার জন্য, এমনকি ইউরোপের দেশগুলোর জন্যও বড় সমস্যা সমাধান করবে।

ভেনেজুয়েলার অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও অভিবাসন স্রোতের জন্য তিনি বামপন্থী মাদুরোকেই দায়ী করেন। তাকে ‘নার্কো-স্বৈরশাসক’ বলে আখ্যা দেন কাস্ত।

২০১৪ সাল থেকে ভেনেজুয়েলার প্রায় ৭০ লাখ নাগরিক দেশ ছেড়েছেন। মাদুরোর ক্রমশ স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের মধ্যে তীব্র অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট থেকে বাঁচতেই তারা দেশত্যাগ করেন।

নির্বাচনের আগে কাস্ত চিলিতে থাকা ভেনেজুয়েলার অবৈধ নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরে যেতে আহ্বান জানান। অন্যথায় মার্চে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দেন। তবে গত মাসে দেশে ফিরতে চাওয়া শত শত অভিবাসী পেরুর সীমান্তে আটকে পড়েন। পেরু তাদের প্রবেশাধিকারে অস্বীকৃতি জানায়।

ভেনেজুয়েলার নাগরিক ও অন্যান্য অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দিতে দক্ষিণ আমেরিকাজুড়ে একটি ‘মানবিক করিডর’ তৈরির প্রস্তাবও দেন কাস্ত।

এদিকে কাস্তের কড়া বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাদুরো। সোমবার তিনি কাস্তকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেন এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ক্ষতি করলে কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

আন্তোনিও কাস্ত চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার প্রথম বিদেশ সফরের জন্য প্রতিবেশী দেশ ও অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে বেছে নেন। আর্জেন্টিনার উদারপন্থী নেতা হাভিয়ার মিলে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি কাস্তকে আদর্শিক মিত্র হিসেবে দেখেন।

তিনি রোববার বামপন্থী বিদায়ী সরকারের প্রার্থীর বিপক্ষে কাস্তের জয়কে অঞ্চলে প্রতিরক্ষার পথে ‘আরো এক ধাপ অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *