আমিরুল ইসলাম অল্ডাম, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের গাংনীতে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের পুর্ব শত্রুতার জের ধরে রাতের আঁধারে প্রতিপক্ষের বাড়িতে ও দোকানে হামলা ,ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।ঘটনাটি ঘটেছে,গত বুধবার রাত আনুমানিক পৌণে আটটার দিকে গাংনী উপজেলার ভবানীপুর সেন্টার মোড় (বাজারে) আবু জেহেলের ছেলে হাফিজুলের বাড়ীতে। অভিযোগে জানা গেছে, ভবানীপুর গ্রামের (সেন্টার পাড়া) বাজারের পার্শে হাফিজুল ইসলাম বেতবাড়ীয়া মৌজার অন্তর্গত ..৬০/৬১ দাগে শরিকানা সূত্রে প্রাপ্ত ওয়ারিশদের নিকট থেকে ১২ শতক জমি ক্রয় করে দীর্ঘদিন ভোগদখল করে আসছেন।
উক্ত জমি নিয়ে অনেকদিন যাবত মালিকানা নিয়ে মামলা চলে আসছে। বিবদমান সমস্যা সমাধানে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প উভয়পক্ষকে নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার ক্যাম্পে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মেম্বরকে নিয়ে বসার কথা ছিল।সালিশ মিমাংসার উদ্যোগকে অমান্য করে পরিকল্পিকভাবে হঠাৎ সন্ধ্যা বেলায় ্ধসঢ়;ঐ জমিতে কাঁঠাল পাড়ার অযুহাতে একজনকে প্রতিপক্ষরা পাঠায়। এতেই ঘটে বিপত্তি। জমির ক্রয়সূত্রে মালিক হাফিজুল কাঁঠাল পাড়তে বাঁধা দেয়।
পরক্ষণে রাত পৌণে ৮ টার দিকে প্রতিপক্ষরা সংঘবদ্ধভাবে জিয়ারুল, রুহুল আমিন ও সেন্টুর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র লাঠি সোটা,রড, হাসুয়া, রামদা, ফলা, শাবল , ইটপাটকেল নিয়ে দলগত হয়ে কাশেমের ছেলে পিয়ার আলী (৪০), ইয়ারুলের ছেলে সুমন (৩০), বানেজ আলীর ছেলে উকিল (৩৩), কছিমউদ্দীনের ছেলে নবী(৫৫), জসিমউদ্দীনের ছেলে বানেজ (৫৫), ইসমাইল হোসেনের ছেলে সাহারুল (৪৫),ও নাহারুল (৫০), জসিমউদ্দীনের ছেলে
নবীরুল (৬০), কছিমউদ্দীনের ছেলে আলী হোসেন (৫২), ও কাশেম (৬২), জসিমউদ্দীনের ছেলে ইয়ারুল (৬০), বানেজের ছেলে টুটুল (৩৫), ইসমাইলের ছেলে রুহুল আমিন (৫২) ও টুটুলের ছেলে ছিমন আলী সহ (১৫) বেশ কয়েকজন মহিলা লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভবানীপুর সেন্টার মোড়ে হাফিজুলের বাড়িতে ও দোকানে হামলা চালায়।এসময় তারা হাফিজুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে
ডাকাডাকি করে বাড়িতে না পেয়ে বাড়ি ঘর ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। দোকানের তালা ভেঙ্গে দোকানের আসবাবপত্র বিশেষ করে কাঁচের সোকেচসহ মালামাল ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এনজিও থেকে উত্তোলনকৃত দোকানের ড্রয়ারে থাকা দেড় লাখ টাকাও লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে হাফিজুল জানিয়েছে। এছাড়াও হাফিজুলকে না পেয়ে বাড়ির দরজায় ও ছাদে অসংখ্য ইট পাটকেল ছুড়ে মেরেছে। আরও জানা গেছে, জিয়ারুল ও সেন্টু বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে মহিলাদের অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে লাঞ্ছিত করেছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে হাফিজুল ইসলাম স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প ও গাংনী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও অজ্ঞাত কারনে পুলিশ ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। ফলে ভবানীপুর গ্রামে প্রতিহিংসার আগুন এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে। যে কোন মুহূর্তে বড় ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামের সাবেক মেম্বর রেজাউল হক জানান, হাফিজুলের বাড়িতে ও দোকানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা সত্য। আজ শুক্রবার সকালে ক্যাম্পে জমি জমার কাগজ নিয়ে সালিশ মিমাংসার কথা ছিল। তারা সমাজ না মেনে অন্যায় করেছে। আমি মাগরিবের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেখছি লাঠি সোটা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১০ /১৫ জন পুরুষ ও মহিলা যাচ্ছে। আমি নিষেধ করা সত্বেও তারা আমাকে অমান্য করে বাড়ি ও দোকানে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। এঘটনায় গ্রামের আরেকজন সাবেক মেম্বর আনারুল ইসলাম জানান, আমি ঘটনার পরদিন সকালে লোকমুখে শুনেছি। রাতের বেলায় দেশীয় অস্ত্র লাঠি সোটা দলবল নিয়ে হাফিজলের বাড়ি ও দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা ঠিক হয়নি। এটা অন্যায় হয়েছে। হাফিজুল ইসলাম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় এখনও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। একই অভিমত জানালেন বর্তমান মেম্বর রেজাউল হক। এছাড়াও ঘটনার সত্যতা জানিয়ে অসংখ্য নারী পুরুষ মহল্লাবাসী তীব্রনিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে পুলিশ প্রশাসনকে অভিযোগ দেয়ার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে গ্রামবাসীর সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এব্যাপারে ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত আইসি এস আই মেহেদী হাসান জানান, আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করেছি।
ক্যাম্পে উভয়পক্ষকে নিয়ে ২/১ দিনের মধ্যে বসে আপোষ মিমাংসা করা হবে। তবে হাফিজুল ইসলাম জানান, ঘটনার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও যখন পুলিশ কোন ভুমিকা নেয়নি। আমি সুষ্ঠু বিচারের জন্য আদালতের শরনাপন্ন হবো।