শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
ইরানি এক গুপ্তচরের তথ্য পেয়ে লেবাননে হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহর ওপর হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। ফরাসি একটি পত্রিকা এই দাবি করেছে।
শুক্রবার বৈরুতের উপকণ্ঠে ওই হামলা চালানো হয়। এতে নাসরুল্লাহসহ কয়েকজন নিহত হন। এর আগে লেবাননজুড়ে হাজার হাজার পেজার এবং অন্যান্য ডিভাইসে বিস্ফোরণে প্রমাণিত হয়েছে যে ইসরাইলি গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক সেখানে বেশ শক্তিশালী হয়ে পড়েছে।
ফরাসি পত্রিকা লে প্যারিসিয়ান জানায়, হামলার আগে নাসরুল্লাহর অবস্থান সম্পর্কে ইসরাইলকে অবগত করেছিলেন এক ইরানি চর। ওই সময় বৈরুতের ওই ভূগর্ভস্থ সদরদফতরে শীর্ষ কয়েকজন নেতার সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেছিলেন নাসরুল্লাহ। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বৈরুতের দক্ষিণে মাটি থেকে ৬০ ফুট নিচে ছিল নাসরুল্লাহর বাঙ্কার। খবর পেয়েই ইসরাইল বিমান হামলা চালায় সেখানে। ওই বহুতল ভবনটি উপর একের পর এক বোমাবর্ষণ করে তারা। কয়েক মিনিটে ৮৫টি এক টনের বোমা ফেলা হয় ওই বহুতল লক্ষ্য করে। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাসরুল্লাহ এবং হিজবুল্লাহর আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য ‘জিহিইউ-৩১ জেডিএএম’ এবং ‘স্পাইস ২০০০’ বোমা ব্যবহার করেছে ইসরাইল। প্রথম বোমাটি বানিয়েছে আমেরিকা। ফিলিস্তিন প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ইসরাইলকে এই বোমা সরবরাহ করে আমেরিকা। ‘স্পাইস ২০০০’ বোমাটি তৈরি করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা সংস্থা। বোমার অভিঘাত এতটাই ছিল যে সাময়িক ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।
তবে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরকচি অভিযোগ করেছেন, ওই বাঙ্কারে ইসরাইল বেশ কয়েকটি ৫০০০ পাউন্ডের বাঙ্কার বাস্টার ব্যবহার করে। হামলাটির কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্র সেগুলো ইসরাইলকে ‘উপহার’ দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, হিজবুল্লাহপ্রধান নাসরাল্লাকে প্রাণে মারার জন্য লেবাননে ‘নিউ অর্ডার’ নামে অভিযান শুরু করে ইসরাইল। ইসরাইলি বাহিনী আইডিএফ সূত্রে খবর, গত কয়েক মাস ধরেই নাসরুল্লাহর গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছিল। তবে নাসরুল্লাহ প্রতি মুহূর্তে তার ঠিকানা বদলাচ্ছিলেন।
৩২ বছর ধরে হিজবুল্লাহর প্রধান ছিলেন নাসরুল্লাহ। তার জন্যই ২০০০ সালে ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবানন ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, এই নাসরুল্লাহর নেতৃত্বেই ২০০৬ সালে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ৩৪ দিন ধরে হিজবুল্লাহ লড়াই জারি রেখেছিল। লেবাননে গত দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত সপ্তাহেই সেখানে একের পর এক পেজার, ওয়াকিটকি বিস্ফোরণে বহু প্রাণহানি হয়। একইসাথে হিজবুল্লাহর ডেরা লক্ষ্য করে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরাইল।
সূত্র : মিন্ট, আনন্দবাজার পত্রিকা এবং অন্যান্য