মোঃ আহসানউল্লাহ হাসানঃ
নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জের ভগবান ছিলেন পলাতক ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। গাজী চাইলে কাউকে জমিজমা দিতে পারতেন, আবার কারোর জমিজমা ১মিনিটের মধ্যেই ছিনিয়ে নিতে পারতেন। তবে কার জমি দখল নিতে হবে সেই পরিকল্পনা আবার গাজীর ভুমিমন্ত্রী খ্যাত মোখলেছুর রহমান নির্ধারন করতেন। আর একাজ করে ইটভাটায় ৮শ টাকা বেতনের কর্মচারী মোখলেছুর রহমান এখন অন্তত দেড় দশকে হাজার কোটি টাকার মালিক। মোখলেছের ভগবান গাজী গণহত্যার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও মোখলেছ কিন্তু অন্য ভগবানের ঘরে ঢুকে পড়েছেন। নিজের অন্নদাতা ভগবান গাজীকে এখন চিনেই না। এলাকাবাসীর মধ্যে গুণজন শোনা যাচ্ছে, মোখলেছ ১০ কোটি টাকা বিনিময়ে বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার শেল্টারে ঢুকে পড়েছেন। যেকারন হাসিনা পতনের পর গাজীর ভুমিদস্যু ক্যাডার সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেলে মোখলেছ রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন তারাব পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হাজি মোখলেছুর রহমান, লেখা পড়া করেছেন অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। বাবা জমির আলী ছিলেন ছাগল ব্যবসায়ী। সংসার চালাতে গিয়ে মোখলেছের স্কুলের বেতন দিতে হিমশিম খেতেন। যাকে বলে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা।
ত্রিশ বছর আগে রুপগঞ্জের পাকিস্তান মিল সংলগ্ন একটি ইট ভাটায় ৮শ টাকা মাসিক বেতনে চাকরির সাধ্যমেই মোখলেছের কর্মজীবন শুরু হয়। বিগত ১দশকে সেই মোখলেছ হাজার কোটি টাকা মালিক বনে গেলেন। সুত্র জানায়, রুপগঞ্জের সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর ভূমিদস্যুতা সহ সকল প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন বাহিনীর কয়েকজনের মধ্যে একজন এই মুখলেছুর রহমান। জয়বাংলার মিছিলে ঢুকে গাজীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সেই থেকে তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গাজীর জন্য জোড়পূর্বক অসহায় মানুষের জমিজমা দখলে বেচাবিক্রি করে মাঝখান থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা। এলাবাসীর মতে মোখলেছ বিগত ১দশকে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। যাকে ২০/২৫ পূর্বেও ইটভাটায় দিনমজুরী করে সংসার চালাতো হতো।
রূপগঞ্জের বরপা শান্তিনগর এলাকায় বহুতল বিশিষ্ট ৬টি ভবন, বরপা আরিয়াব এলাকায় ৬তলা বিশিষ্ট একটি ভবন, বরপা বাসস্টান্ডের পশ্চিমে মোখলেসুর রহমানের নিজ বাড়িতে বহুতল বিশিষ্ট তিনটি ভবন। এর পাশেই বিশাল টেক্সটাইল মিল, ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে তিনটি প্লাট। সহ ব্যাংকে শত শত কোটি টাকা সহ-সম্পত্তির পাহাড়। এলাকায় সে দানবীর মোখলেছুর রহমান হিসেবেই পরিচিত। অন্যের সম্পদ লুট করে গাড়ী-বাড়ী সহ বিশাল সম্পদের পাহাড় গড়ে হয়েছেন হাতেম তাই।
সুত্র জানায়, তারাব এলাকার গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে নিরহ মানুষের জমিজমা নাম মাত্র টাকা দিয়ে, কখনো প্রাননাশের ভয় দেখিয়ে, কখনো জোড়পূর্বক উচ্ছেদ করে দখলে নিকেন। সম্প্রতি হিন্দুদের জমি জোর করে দখলে নেয়া সহ গোলাম দস্তগীর গাজীর সকল অবৈধ অপকর্মের মুল হোতা ছিলেন মোখলেসুর রহমান। জোর দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন হাজী মোখলেছুর রহমান। এভাবেই গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। হয়ে উঠেন ওই এলাকার স্বঘোষিত মাফিয়া।
৫ই আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা দেশ ও এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও বহাল তবিয়তে মোখলেসুর রহমান। জানা যায় মোখলেসুর রহমান নিজেকে বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতা ও এক উপদেষ্টার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এখনো এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। তানা হলে তিনি বিগত ১৫ বছরে যে পরিমান অপকর্ম করেছেন তার খেসারত হিসেবে পালিয়ে থাকা ছাড়া কোন উপায় ছিলো না। জনগনের রোষানলে পড়লে যেকোন অঘটন ঘটতে পারতো।
এ ব্যাপারে মোখলেছুর রহমানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা, আমার কোন সম্পত্তি নেই। আপনি তদন্ত করে দেখেন।