আমিরুল ইসলাম অল্ডাম, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি :
গাংনীতে শতভাগ পদোন্নতিসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি , গাংনী উপজে লা শাখার আয়োজনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর আলোকে আজ বুধবার বিকেলে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়।
এানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি আকতারুজ্জামান বকুল।
মানববন্ধনে বক্তারা প্রথমেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে (ছাত্র জনতা) আত্মদানকারি শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও তাদের প্রতি বিনম্রশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। বক্তারা বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষার ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা।
প্রাথমিক শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগারের কান্ডারী। ছাত্র জনতার বৈষম্য হীন সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে।
আমরাও সমতার স্মার্ট নাগরিক গড়ার প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। বক্তারা আরও আক্ষেপ করে বলেন, আমরা শিক্ষক, অথচ ৩য় শ্রেণির কর্মচারীর যে সম্মান রয়েছে আমাদের সে সম্মানটুকু দেয়া হয়না। তাদের বেতন স্কেল ১২ তম, সেখানে শিক্ষকদেে গ্রেড ১৩ তম। বর্তমানে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে যারা যোগদান বা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সকলেই ডিগ্রী পাশ। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।
এখন যে মাসিক বেতন ভাতা সেই টাকা দিয়ে পরিবারের ব্যয়সংকুলান করা সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে ঋণের বোঝা মাথায়
নিয়ে হতাশা ও মনকষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। মাসিক এই বেতন ভাতায় সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে উন্নত জীবন
মান রক্ষা করা সম্ভব হয় না।
আমরা এই বৈষম্য বাতিল করে সহকারী শিক্ষকদের ১০ম এবং প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেড বাস্তবায়নের দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহনের নির্দেশ প্রদানের করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
বক্তারা শিক্ষকদেও যোগ্যতা ও ন্যায্যতার আলোকে ১০ম গ্রেড এবং ৯ম গ্রেড প্রদানের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। শিক্ষকদের প্রাণের
দাবি, নিয়োগ বিধি সংশোধন পূর্বক শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি চাই। এসময় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি , গাংনী উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক সেলিম আহমেদ, ধানখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন,খড়মপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রদান শিক্ষক সাইদুল ইসলাম, করমদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম খলিল, সাহারবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মখলেছুর রহমান, সাহারবাটি ইবাদতখানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাওছার আলী প্রমুখ। এছাড়াও শিক্ষক রোকুনুজ্জামান পলাশের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সহকারী শিক্ষক লাবণী আক্তার, আসিফ আহমেদ প্রমুখ।
মানববন্ধনে গাংনী উপজেলার ১৬২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ৩ শত শিক্ষক অংশ নেয়। ‘শিক্ষক কেন ৩য় শ্রেণির কর্মচারী, ‘যারা জাতির কারিগর ১০ম গ্রেড তাদেও অধিকার’ যদি হয় বঞ্চনা তাহলে মানিনা, মানবো না,আমাকে অর্থনৈতিক মুক্তি দাও, আমি সমৃদ্ধ জাতি গড়ে দেব, শিক্ষকরা এমন বিভিন্ন প্লাকার্ড ও ফেষ্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষক প্রতিনিধিবৃন্দ গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন।