দেশে ১০ বছরে অভিবাসন খাতে হুন্ডির মাধ্যমে ১৩ লাখ কোটি টাকা লেনদেন

শুভদিন অনলাইন ডেস্ক

দেশের আমলা, রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীদের অশুভ চক্রের কারণে খাদে অভিবাসন খাত। অথচ দুর্নীতি না থাকায় ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে এ খাতের অবস্থা অনেক ভালো। শ্বেতপত্র কমিটি বলছে, ১০ বছরে হুন্ডির মাধ্যমে ১৩ লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করেছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।

ভিসা বাণিজ্যের কারণে অভিবাসন ব্যয় বাড়ছে। নিয়োগকারী দেশের ভিসা কিনে অন্য দেশ ও একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে ভিসার দাম বাড়ায় রিক্রুটিং এজেন্সি। ফলে জনপ্রতি অভিবাসন ব্যয় দাঁড়ায় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এই বাড়তি টাকার বোঝার চাপ অভিবাসী কর্মীদের ওপর।

শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, জনপ্রতি ২ লাখ টাকা করে হিসাব করলে, ১০ বছরে পাচার হয়েছে ১৩ লাখ কোটি টাকার বেশি। যা কিনা উত্তরা থেকে মতিঝিল মেট্রোরেল নির্মাণ ব্যয়ের চারগুণ। ভিসার জন্য টাকা দিয়েও বিদেশ যেতে না পারা কর্মীদের হিসাব করলে আরেকটি মেট্রোরেল করা যেতো।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ‘এই সেক্টরের দুর্নীতি কেন দূর করা যায়নি! এখন যদি মালয়শিয়ার প্রসঙ্গে আসি, সিন্ডিকেশনের লোকগুলোকে ধরে শাস্তির আওতায় আনার কাজগুলো যদি না করি, ভবিষ্যতে এই ধরনের সিন্ডিকেশন করা যাবে না, এই জায়গায় যদি আমরা না পৌঁছাই, তাহলে এইটা কিন্তু সরকার বদল হবে কিন্তু অন্যায়গুলো চলতে থাকবে।

টিআইবি বলছে, শুধু ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট বাবদ ৬টি দেশে বছরে অর্থপাচার হয় ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। ১০ বছরে যার পরিমাণ ২৫ লাখ কোটি টাকা। সিন্ডিকেটের কারণে শুধু অর্থ পাচার নয়, কর্মীরাও ন্যায্য পাওনা পাচ্ছেন না।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এইটার সমাধানের জন্য জাস্ট ফাইলটা বের করে দেখতে হবে কারা এগুলার সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। একটা হচ্ছে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকেন আরেকটি হলো পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে ভূমিকা পালন করে। দুইটা পক্ষই কিন্তু সুবিধাভোগী, দুই পক্ষই লাভবান হচ্ছে। এই সুবিধাগুলো এই চক্রটা ভোগ করেছে।

বিপুল প্রবাসী আয় হলেও বাজেটে সবচেয়ে অবহেলিত অভিবাসন খাত। এটিও এ খাতে শোষণের অন্যতম কারণ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

Related posts

Leave a Comment