টি-টোয়েন্টি দলে মিরাজ ও তাসকিন

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

শুরুতে দেয়া ১৫ সদস্যের দল থেকে দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও শহিদুল ইসলাম এবং মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলী চৌধুরী ছিটকে যান। এতে কার্যত কেবল ১২ জন ছিলেন টি-টোয়েন্টি দলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে যুক্ত করা হয়েছে অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ও পেসার তাসকিন আহমেদকে। টেস্ট ও ওয়ানডেতে জাতীয় দলে নিয়মিত মিরাজ। এবার টি-টোয়েন্টিতেও নিয়মিত হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন তিনি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেন মিরাজ। এই সংস্করণে জাতীয় দলে ফিরতে কঠোর পরিশ্রমও করছিলেন তিনি। উন্নতির আভাস দেন বিপিএলের সবশেষ আসরে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ম্যাচে ১১৭.৫০ স্ট্রাইক রেট ও ১০.৪৪ গড়ে তার রান ৯৪। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৯।
উইকেট নিয়েছেন কেবল চারটি, ৮২.৫০ গড়ে। ওভার প্রতি গুনেছেন ৯-এর বেশি রান। তিন সংস্করণেই এখন নিয়মিত পেস তারকা তাসকিন। দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া চোট থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠায় টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পেলেন তিনি। ক্যারিয়ারে ৩৩টি বিশ ওবারের ম্যাচ খেলেছেন এ ডানহাতি পেসার। গত নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেন তাসকিন। চোটের জন্য সফরের আগেই ছিটকে যান শহিদুল। এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার জন্য প্রস্তুত নন সাইফ, তাই শুরুতে দলে রাখা হলেও পরে সরিয়ে নেওয়া হয় তার নাম। আর সফরের শুরুতে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিন চোট পাওয়ায় লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে যান ইয়াসির আলী।
২ ও ৩রা জুলাই ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে হবে সিরিজের প্রথম দুটি টি-টোয়েন্টি। ৭ই জুলাই গায়ানা স্টেডিয়ামে হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

রানের জন্য অন্য উপায় খুঁজছেন সিডন্স

টি-টোয়েন্টি মানেই চার-ছক্কার খেলা। তবে পাওয়ার হিটারের অভাবে এই ফরম্যাটে পাহাড়সম রান পায় না বাংলাদেশ। আর টাইগারদের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স মনে করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজে জয় পেতে বিশাল সংগ্রহের প্রয়োজন নেই; যুতসই ব্যাটিংয়ের পর বাকিটা সামলে নেয়ার যোগ্যতা রয়েছে বাংলাদেশের বোলারদের। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংল্যান্ডের দেয়া ১৫৬ রানের টার্গেটে ধুঁকছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রানের। গোটা ম্যাচে ক্যারিবীয়দের যা টালমাটাল পারফরম্যান্স তাতে ৬ বলে এই রান তাড়া করা অসম্ভব মনে হচ্ছিল। কিন্তু কার্লোস ব্রাথওয়েটের অবিশ্বাস্য টানা ৪ ছক্কায় জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটারদের এমন অতিমানবীয় পারফরম্যান্স দেখা যায় প্রায়ই। সপ্তাহখানেক আগেই ক্রিকেটবিশ্ব দেখেছে জস বাটলারের তাণ্ডব। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৪ ছক্কা ও ৭ চারে ইংলিশ ব্যাটার খেলেন ১৬২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। বাটলার-ব্র্যাথওয়েটদের মতো দীর্ঘকায় নয় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। তাই বিকল্প উপায় খুঁজেছেন জেমি সিডন্স। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমার মনে হয় না আমাদের (বাংলাদেশের) খুব দীর্ঘকায় গড়নের খেলোয়াড় রয়েছে। যেমন জস বাটলার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিসদের মতো বড়সড় দৈহিক গড়ন আমাদের নেই। আমাদের অন্য উপায় খুঁজতে হবে। আমরা দৈহিক গড়নে অন্য দলগুলোকে পেছনে ফেলতে পারবো না।
আমাদের বোলিং বিভাগ খুব ভালো। আমার মনে হয় না, আমাদের অনেক বেশি রান করতে হবে। বোর্ডে একটা ভালো সংগ্রহ দাঁড় করাতে হবে। এজন্য সিঙ্গেল অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে পাওয়ার হিটিং অবশ্যই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতায়। যত বেশি বাউন্ডারি, তত বেশি ম্যাচ জেতা যায়। আমাদের পাওয়ার হিটিংয়ে মনোযোগ দিতে হবে, ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। অনেক চার মারতে হবে… আপনি জানেন এটি অনেকগুলো ছক্কা মারার মতোই। আমরা যদি অনেক চার মারতে পারি, অনেক সিঙ্গেল নিতে পারি… পাশাপাশি কিছু ছক্কা হাঁকালে আমরা বোর্ডে ভালো স্কোর দিতে পারবো। এরপর আমাদের বোলিং আক্রমণ বাকিটা সামলে নিতে পারবে। আমাদের পাহাড়সম রান করতে হবে না।’

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল

মাহমুদুল্লাহ (অধিনায়ক), মুনিম শাহরিয়ার, লিটন কুমার দাস, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ।

Related posts

Leave a Comment