শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণে নির্ধারিত সময়ে সৌদি যেতে পারেননি সব হজযাত্রী। এ কারণে ফ্লাইটের সময় আরও দুই দিন বাড়িয়েছে সরকার। আগামীকাল শনিবার হজফ্লাইট শেষ হবে। এদিকে দেশের সব হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর পবিত্র হজ পালনে যাচ্ছেন এক লাখ ২২ হাজার ৫৫৮ জন। এর মধ্যে সরকারি হজযাত্রী ১০ হাজার ৩৬০ জন এবং বেসরকারি হজযাত্রী এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন। এসব হজযাত্রীর সবার ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। এর পাশাপাশি হজযাত্রীদের সেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন টিমের সদস্যসহ মোট এক লাখ ২৩ হাজার ২৭৮টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। গত ২১ মে বাংলাদেশ থেকে হজফ্লাইট শুরু হয়। গত বুধবার রাত ৩টা পর্যন্ত ২৯৯টি ফ্লাইটে সৌদি পৌঁছেছেন মোট এক লাখ ১২ হাজার ৬৩৬ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী ১০ হাজার ১২৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী এক লাখ দুই হাজার ৫১১ জন। গতকালও ১৩টি ফ্লাইটের মধ্যে ১২টি ফ্লাইটে প্রায় চার হাজার হজযাত্রী গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার হজের ফ্লাইট শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণে সব হজযাত্রী এখনো সৌদি যেতে পারেননি।
জানা যায়, হজযাত্রী সঙ্কটের কারণে ২৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১৯টি ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়। এর মধ্যে গতকালও একটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এ ছাড়া অনেক ফ্লাইট আসন খালি রেখে সৌদি আরব গেছে। প্রথম দিনই ১৪০ আসন খালি রেখে বিমান যাত্রা করেছিল। এসব কারণে শেষ সময়ে এসে প্রায় ছয় হাজার ৫০০ জন হজযাত্রীকে সৌদিতে পৌঁছে দিতে অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইটের অনুমতি চায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। বিষয়টি সৌদি রাষ্ট্রদূতকে দিয়ে বলা হয় সৌদির ওমরাহ ও হজমন্ত্রীকে। অবশেষে অনুমতিও মিলেছে দেশটির পক্ষ থেকে। অতিরিক্ত এসব ফ্লাইট পরিচালনায় দুদিন সময় বাড়িয়েছে সরকার। আজ ও আগামীকাল অতিরিক্ত ১০টি ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এর মধ্যে ফ্লাইনাস ৬টি ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
২৩ বাংলাদেশীর ইন্তেকাল : আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগেই সৌদি আরবে ২৩ জন বাংলাদেশী হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২০ জন ও নারী ৩ জন।
হজের আগেই ঢাকায় চলে এলো জমজমের পানি : হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই সৌদি আরবে হজে যাওয়া সব বাংলাদেশীর জমজমের পানি ঢাকায় পৌঁছে গেছে। বর্তমানে এটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাখা আছে। প্রত্যেক হজযাত্রী দেশে ফেরার পর তাকে একটি করে ৫ লিটার পানির গ্যালন দেয়া হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ঢাকাগামী ফাঁকা ফ্লাইটে (ডেডিকেটেড ফ্লাইট) জমজমের পানির এসব বক্স আনা হয়। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে সব হজযাত্রীর জমজমের পানি চলে এসেছে। এগুলো বিমানবন্দরে সংরক্ষিত আছে। পরিবহনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় হজযাত্রীর সংখ্যার চেয়েও কিছু অতিরিক্ত বক্স আনা হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আগে হজ শেষে বাংলাদেশে ফেরার সময় বিমানের যাত্রীদের জমজমের পানি লাগেজের সাথে বুকিং দিয়ে আনতে হতো। তবে কয়েক বছর ধরে এই ধরন বদলেছে। বাংলাদেশগামী ফ্লাইটে কেবিন ক্রু সম্মানিত হাজীদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে টোকেন দিবেন। বাংলাদেশে পৌঁছে ইমিগ্রেশন এবং লাগেজ সংগ্রহ শেষ করার পর ওই টোকেনটি জমা দিলেই প্রত্যেক যাত্রী পাঁচ লিটারের জমজমের পানির একটি বক্স পাবেন। শুধু ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম এবং সিলেটে বিমানবন্দরে অবতরণ করা যাত্রীরাও একইভাবে জমজমের পানি পাবেন।-পিবিএ