শুভদিন অনলাইন রিপোর্টারঃ
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যানে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে জুলাই মাস। ভয়ংকর এই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে একচল্লিশ হাজার। যা কিনা জুন মাসের তুলনায় সাত গুণ বেশি। আর মৃত্যুর সংখ্যাও উদ্বেগজনক। জুলাইয়ের ৩০ দিনে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২০০ জন।
ডেঙ্গু নিয়ে এখন দেশজুড়ে হাহাকারের ধ্বনি। রোগী নিয়ে স্বজনের ছোটাছুটি, ভর্তির তোরজোর। আর তীব্র শয্যা সংকটে চিকিৎসা নেয়াই অনেকটা ভয়ংকর বিষয় হয়ে উঠেছে।
তবু বাধ্য হয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে সেবা গ্রহণের চলছে প্রাণপণ চেষ্টা। দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালের চিত্রই এমন ভয়াবহ। বাদ পড়েনি বেসরকারি হাসপাতালও। সংকট সেখানেও।
দেশে ক্রমবর্ধমানহারে ডেঙ্গু রোগী বাড়তে থাকায় বর্তমান পরিস্থিতি এক প্রকার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সরকারি খণ্ডিত হিসেবে চলতি বছর সারাদেশে এরই মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৫০ হাজারে। মারা গেছেন প্রায় আড়াইশ’ মানুষ।
এত গেল সার্বিক তথ্য। এর বাইরে শুধুমাত্র জুলাই মাসের পরিসংখ্যানে আঁতকে ওঠার মতো অবস্থা। কেননা, জুনের তুলনায় চলতি মাসে রোগী বেড়েছে সাত গুণ। মারা গেছেন ২০০ জন। যা কিনা ডেঙ্গু আক্রান্তদের ভয়াবহ বছর ২০১৯ সাল এবং মৃত্যুর দিক থেকে বিভীষিকাময় বছর ২০২২-কেও হার মানায়।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি তাতে আমরা সহসা এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো বা ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমানো যাবে, বিষয়টা তেমন না। বর্তমান পরিস্থিতি ২০১৯ সালের চেয়েও ভয়াবহ দিকেই যাচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনায় বেশি জোর দেয়ার পরামর্শ এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের। তিনি বলেন, আমাদের ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এছাড়া ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনায় ডাক্তার ও নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সারা বছরই প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম জারি রাখার কথা ভরা হচ্ছে।
ডেঙ্গুতে সবথেকে বেশি রোগীর মৃত্যু হয় ২০২২ সালে। সে বছর ৬১ হাজার রোগীর মধ্যে মারা যান ২৮১ জন।