শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
কয়েক দিন ধরে মাঠের বাইরে নানা ধরনের সমালোচনা নিয়ে বেহাল অবস্থায় দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। ক্রিকেট বোর্ডের অন্দরমহলে চরম উত্তেজনা। অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যেই মতবিরোধ। ব্যাংকিং খাত বাইরে চলে আসায় পরস্পর বিরোধী অভিযোগ চলছে। এমন অবস্থায় মাঠে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স লেজেগোবরে। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এক তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তো রীতিমতো ধারাবাহিক নাটক পরিচালিত হয়ে গিয়েছে গেল কয়েক দিনে। যাতে করে ক্রিকেটের কথা শুনলে সাধারণ অনুরাগী ছি ছি করছে। এমন পরিস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দলের কোচ জানিয়ে দিয়েছেন মাঠের বাইরের খারাপ খবরগুলো মাঠের ভেতরে আনতে চান না। খেলাটা খেলার মাঠেই রাখতে চান তিনি।
আজ চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে (আগের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম) সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামবে শান্তরা। সিলেট টেস্টে হারার পর এই ম্যাচে তাদের লক্ষ্য একটাই সিরিজ বাঁচানোর। আজ সকাল ১০ টায় শুরু হবে ম্যাচটি। গত দুই দিন তপ্ত গরমে কঠোর অনুশীলন এবং তপ্ত গরমে ক্রিকেটাররা একেবারে কাহিল। তার চেয়েও বেশি অস্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছেন বাংলাদেশ দলের কোচ ফিল সিমন্স। সেটা অনুধাবন করা গেল গতকাল রবিবার দ্বিতীয় দিনের অনুশীলনের পর তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার পর। প্রচণ্ড রোদে ঘাম নিয়ে একাকার হয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া সেন্টারে বাংলাদেশের প্রধান কোচ বললেন, ‘প্রখর রোদ ভ্যাপসা আবহাওয়া তার মতো এখন একটু শীতলতা আশ্রয় খুঁজছে বাংলাদেশ ক্রিকেটও। কিন্তু চট্টগ্রামের অসহনীয় গরমের চেয়েও বেশি উত্তপ্ত এখন মাঠের বাইরের ক্রিকেট।’
সিলেটে লাক্কাতুরায় বাজে ব্যাটিংয়ের খেসারত দিয়ে বিব্রতকর অবস্থার পর চট্টগ্রামে দুই দিন অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। শনিবার পুরো দল মাঠে এলেও, ম্যাচের আগের দিন অর্থাৎ গতকাল বিশ্রামে থাকেন তিন পেসার হাসান মাহমুদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও তানজিম হাসান। বোলিং নিয়ে তেমন দুর্ভাবনার কারণও নেই বাংলাদেশের। গত কয়েক ম্যাচ ধরেই ব্যাটিংয়ের কারণে ভুগছে তারা। উদ্বোধনী জুটিতে চলছে রানের খরা। সিলেটে থিতু হয়েও বড় করতে পারেননি তাদের ইনিংস। আর দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ মুশফিক তো দুই ইনিংস মিলিয়ে ৩৮ বল খেলে করেছেন ৮ রান। যদি তিনি লম্বা সময় ধরেই এই ফরম্যাটে রান খড়ায় ভুগছেন। সব মিলিয়ে দলের ব্যাটারদের হতশ্রী অবস্থা। সেখানে খানিকটা সাপোর্ট দিতেই এই ম্যাচের স্কোয়াডে চলমান ডিপিএলে রান বন্যা বইয়ে দেওয়া এনামুল হক বিজয়কে ভিড়িয়েছেন নির্বাচকরা।
এদিকে প্রথম টেস্টে ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও বোলাররা ছিল উজ্জ্বল। দুই ইনিংস মিলিয়ে স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ শিকার করেছিলেন ১০ উইকেট তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন আরেক বা-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তরুণ গতি তারকা নাহিদ রানাও আগুন ঝড়িয়েছিলেন বল হাতে যদিও তিনি নেই এই ম্যাচে। তিনি পাকিস্তান গিয়েছেন পিএসএল খেলতে। তবে তার না থাকা নিয়ে ভাবছেন না কোচ। সিমন্সের বিশ্বাস রয়েছে বাকি বোলারদের ওপর। সিমন্স বলেন, ‘আমরা শক্তি হারাইনি, হারিয়েছি গতি। রানা যে গতিতে বল করতো, তা এখানে এখন নেই। তবে দলে কয়েক জন দক্ষতা ও অভিজ্ঞ বোলার রয়েছে, বিশেষ করে চট্টগ্রামের স্লো উইকেটে কেমন বল করতে হয় সেটা তারা জানে। আশা করি, কিছুটা টার্ন আদায় করতে পারব, আর সিমাররা তাদের দক্ষতায় উইকেট তুলে নেবে।’
পেসারদের নিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পেসাররা যথেষ্ট দক্ষ। হাসান মাহমুদ পাকিস্তানের মতো পরিবেশে পাঁচ উইকেট নিয়েছে। খালেদ আহমেদও ভালো করেছে। তানজিম হাসান সাকিব এখনো বেশি খেলার সুযোগ পায়নি, তবে তার মধ্যে প্রতিভা আছে। আমাদের সিমারদের স্কিল এবং গভীরতা এখনো যথেষ্ট।’ এ সময় চট্টগ্রামের উইকেট নিয়ে টাইগার হেড কোচ বলেন, ‘পিচটা দারুণ। শক্ত, মসৃণ, একটু শুকনো। আমরা চাইবো শুরুতে কিছু বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিতে, আর ম্যাচের পরে দিকে একটু টার্ন পেলে সেটা আমাদের জন্য লাভজনক হবে।’