শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এ হামলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫২ হাজার ৯২৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তুর্কী বার্তাসংস্থা আনাদোলু অ্যাজেন্সি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
আনাদোলু গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একইসাথে আহত হয়েছেন আরো ১২৫ জন। এ নিয়ে আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা এক লাখ ১৯ হাজার ৮৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘অনেক ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির দুই মাসের মধ্যেই ইসরাইল আবারো ব্যাপকহারে সামরিক অভিযান চালানো শুরু করে। গত ১৮ মার্চ ভোরে শুরু হওয়া অভিযানে এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে দুই হাজার ৭৮০ জন নিহত এবং সাত হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এর আগে, ইসরাইল গত ২ মার্চ থেকে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
গাজা সরকারি মিডিয়া অফিসের মতে, মোট নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে নিহত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসঙ্ঘের হিসাব মতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসাথে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে।
সূত্র : আনাদোলু