আন্দোলনে আবু সাঈদ হত্যা : ১ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউশনের আবেদনে আজ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৪ জুলাই এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

সেই সাথে এই মামলার আসামি পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিকালে প্রসিকিউটর এস এম মঈনুল করিম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন প্রসিডিওরাল কিছু বিষয় শুধু বাকি।’

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউট মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটরগণ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও রাশেদুল হক খোকন।

এর আগে, সকালে এই মামলার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ওই চার আসামি হলেন- রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী (আকাশ)।

গত ২ মার্চ প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই চার জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর প্রসিকিউশনের আবেদনে তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।

২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *