শান্ত-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন বাংলাদেশের

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে রাখল সফরকারী বাংলাদেশ। প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯২ রান করেছে টাইগাররা। শান্ত ১৩৬ এবং মুশফিক ১০৫ রানে অপরাজিত আছেন। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২৪৭ রানের জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করেন এই দু’জন।
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
পঞ্চম ওভারে দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শ্রীলংকার পেসার আসিথা ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এনামুল। ১০ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
এরপর ক্রিজে এসে আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে শুরু করেন নতুন ব্যাটার মোমিনুল হক। ৩ চারে উইকেটে সেট হয়ে যান তিনি। অন্যপ্রান্তে টেস্ট মেজাজে খেলতে থাকেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম। কিন্তু ৬ রানের ব্যবধানে বিদায় নেন তারা। সাদমানকে ১৪ ও মোমিনুলকে ২৯ রানে থামান শ্রীলংকার অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দু রত্নায়াকে।
৪৫ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর জুটি বাঁধেন অধিনায়ক শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। প্রথম সেশনের বাকী সময়ে আর কোন বিপদ হতে দেননি তারা। ৩ উইকেটে ৯০ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
প্রথম সেশনের শেষ ভাগ আত্মবিশ্বাসের সাথেই শেষ করেছেন শান্ত ও মুশফিক। দ্বিতীয় সেশনে শ্রীলংকার বোলারদের উপর দাপট দেখিয়েছেন তারা। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে টেস্টে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শান্ত-মুশফিক। শান্ত ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ এবং মুশফিক ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান।
শান্ত-মুশফিকের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে বিনা উইকেটে ৯২ রান তুলে দ্বিতীয় সেশন নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ১৮২ রানে চা-বিরতিতে যায় টাইগাররা। ঐ সময় শান্ত ৭০ ও মুশফিক ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনের শুরুতে জুটিতে দেড়শ রান পূর্ণ করেন শান্ত-মুশফিক। টেস্টে যে কোন উইকেটে ৩৭তম বারের মত দেড়শ রানের জুটি গড়ল বাংলাদেশ। এরমধ্যে শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ দশবার।
টেস্টে বাংলাদেশের ৩৭টি দেড়শ রানের জুটিরর ১৩টিতে অবদান রেখেছেন মুশফিক।
৭৪তম ওভারের পঞ্চম বলে শ্রীলংকার স্পিনার প্র্রবাথ জয়াসুরিয়াকে সুইপ করে ফাইন লেগে বল পাঠিয়ে ২ রান নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৬তম ম্যাচে ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত। ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। সর্বশেষ সিলেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৫ রান করেছিলেন টাইগার দলনেতা।
৭৭তম ওভারে জুটিতে ২শ পূর্ণ করেন শান্ত-মুশফিক। টেস্টে বাংলাদেশের ১৫তম ২শ রানের জুটি এটি।
দিনের শেষভাগে ৮৬তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৯৭তম ম্যাচে ১২তম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মুশফিক। সর্বশেষ ৭ টেস্টের ১৩ ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরিও পাননি তিনি। গত আগস্টে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি তুলে ১৯১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশি। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ সেঞ্চুরির মালিক এই ডান-হাতি ব্যাটার। ৭২ ম্যাচে ১৩ সেঞ্চুরি নিয়ে এই তালিকায় সবার উপরে আছেন মোমিনুল।
মুশফিকের সেঞ্চুরির পর দিনের বাকি সময় ভালভাবে শেষ করে বাংলাদেশ। ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৬০ বলে ১৩৬ রানে অপরাজিত আছেন শান্ত। ১৮৬ বল খেলে ৫টি চারে অপরাজিত ১০৫ রান করেছেন মুশফিক।
৪৫ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২৪৭ রানের জুটি গড়েছেন শান্ত-মুশফিক। টেস্টে তাদের সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। বাংলাদেশের হয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
শ্রীলংকার অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দু ১২৪ রানে ২টি ও পেসার আসিথা ৫১ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *