মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর খামেনির কঠোর বার্তা

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

কাতারের রাজধানী দোহার উপকণ্ঠে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যার ফলে দোহার একটি অংশ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে। হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
ইসরায়েলি এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এবং ব্রিটিশ বিবিসি অ্যারাবিক এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার জবাবে এই প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে।
এই ঘটনার পর কঠোর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, আমরা কারো ওপর আঘাত হানিনি। তবে কেউ যদি আমাদের ওপর আগ্রাসন চালায়, তাহলে সেটি আমরা কখনোই মেনে নেব না। কোনো পরিস্থিতিতেই না।
তিনি আরও বলেন, ইরানি জাতির যুক্তি খুব পরিষ্কার- আমরা কারো আগ্রাসনের কাছে মাথা নত করব না। আমরা প্রতিরোধ করব, সম্মানের সঙ্গে বাঁচব।
বিশ্লেষকদের মতে, আয়াতুল্লাহ খামেনির এই বক্তব্য কেবল প্রতিক্রিয়ামূলক নয় ; এটি ইরানের ভবিষ্যৎ কৌশলগত অবস্থানেরই প্রতিফলন। এতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, দেশটি আর আগ্রাসনের জবাবে নিরব থাকবে না, বরং প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এর আগে নিরাপত্তার স্বার্থে কাতার সাময়িকভাবে তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং কাতারে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের ঘরের ভেতরে থাকার নির্দেশ দেয় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। এক পশ্চিমা কূটনীতিক জানান, হামলার আগেই আল উদেইদ ঘাঁটির প্রতি হুমকি পাওয়া যাচ্ছিল।
এ হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ছয়টি দেশ- সৌদি আরব, জর্ডান, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লেবানন ও ফিলিস্তিন।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশগুলো হামলাকে কাতারের সার্বভৌমত্ব ও আকাশসীমা লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করেছে। কাতার নিজেও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং এটিকে ‘জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এমন উত্তেজনা যদি দ্রুত কূটনৈতিক উপায়ে নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে তা আরও বিস্তৃত সংঘাতে রূপ নিতে পারে। এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার দিকে, যা এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে পারে কি না, সেটিই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *