আবু সাঈদ হত্যার বিচার তাঁর বাবা দেখে যেতে পারবেন: আইন উপদেষ্টা

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শোকের মধ্য দিয়ে আজ শহীদ আবু সাঈদকে স্মরণ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকীতে বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ তোরণ ও মিউজিয়াম এবং শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বেলা ১১টায় শহীদ আবু সাঈদ তোরণ, মিউজিয়াম স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি স্থাপন করেন। উদ্বোধন শেষে দোয়া মোনাজাত করা হয়।

পরে শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিচারণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. তানজীম উদ্দীন খান।

সভাপতিত্ব করেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শওকাত আলী। বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম ও ডিআইজি আমিনুল ইসলামসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল বলেন, দ্রুতই আবু সাঈদ হত্যার বিচার হবে। তাঁর বাবা এ বিচার দেখে যেতে পারবেন। এ সরকারের আমলেই জুলাই হত্যার বিচার হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রংপুর অঞ্চলের মানুষ আর বৈষম্যের শিকার থাকবে না। ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এ বছরেই হবে। এছাড়া কুড়িগ্রামে ইপিজেড হবে। রংপুর অঞ্চলে হবে চীনের অত্যাধুনিক হাসপাতাল।

আজকের এই দিনে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া আবু সাঈদকে স্মরণ করে কাঁদছেন তার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। তারা বলেছেন, আবু সাঈদ যেন এক আলোকবর্তিকা। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির দিশারী।

শহীদ আবু সাঈদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন সর্বস্তরের মানুষ।

অন্যদিকে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শোক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেইট থেকে এই শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি বের হয়ে নগরীর পার্কের মোড়, মডার্ন মোড় ঘুরে শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলীর নেতৃত্বে প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টায় পীরগঞ্জের বাবনপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে কালো ব্যাজ ধারণ করেন তারা। এরপর ক্যাম্পাসের দক্ষিণ গেট থেকে জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে শোক র‌্যালি বের হয়।

এদিকে বিকেলে জুলাই শহীদ উপলক্ষে ক্যাম্পাসের ভিতরে ক্যাফেটেরিয়ায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও দোয়া এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও অঙ্গ সংগঠন সমুহ, জামায়াতে ইসলামীসহ সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদ আবু সাঈদের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।

এছাড়া শহীদ আবু সাঈদসহ জুলাই বিপ্লবের নিহতদের স্মরণে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *