শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
দক্ষিণ এশিয়ার চির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের সঙ্গে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের পর পাকিস্তান তার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা তদারকি করতে নতুন একটি সামরিক বাহিনী গঠন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
বুধবার ইসলামাবাদে স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ রকেট ফোর্স কমান্ড গঠনের ঘোষণা দেন। সেখানে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘এ বাহিনী আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত হবে এবং শত্রুকে সব দিক থেকে আঘাত করার সক্ষমতা রাখবে।’
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণ ও প্রদর্শনীতে ভারতের সঙ্গে গত মে মাসের সঙ্গে সংঘাতের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়।
সামরিক বাহিনীর কর্মদক্ষতার প্রশংসা করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আমাদের প্রচলিত যুদ্ধ সক্ষমতা উন্নত করবে।’
গত মে মাসে পাকিস্তান ও ভারত চার দিনের একটি তীব্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুই পক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও আর্টিলারি হামলায় ৭০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়। এটি ছিল ১৯৯৯ সালের পর পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত প্রতিবেশী এ দেশ দু’টির মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাত।
পাকিস্তানের উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা রয়েছে। গত মে মাসে জে-১০সি ভিগোরাস ড্রাগন এবং জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি দেশটির উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রের কিছুসংখ্যক পরিমাণ ব্যবহার করা হয়।
সংঘাতের পর পাকিস্তান তার সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। এ লক্ষ্যে দেশ বর্তমান বাজেটে ২০ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে। বাজেটটি জুনে পাস হয়েছে।
সরকার ৪০টি নতুন চীনা যুদ্ধবিমান এবং নতুন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করার কথাও ঘোষণা করেছে।
সাবেক জেনারেল ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক তালাত মাসুদ বলেন , সম্প্রতি সংঘাতের পর মূল উদ্দেশ্য অবশ্যই পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করা এবং সেই প্রক্রিয়ারই এটি একটি অংশ।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার জেরে গত মে মাসের দুদেশের মধ্যে একটি প্রাণঘাতী সংঘাতের ঘটনা ঘটে। কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে দিল্লি। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত। উভয় দেশই পুরো অঞ্চলটি দাবি করে এবং এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশ দু’টি এ পর্যন্ত দুইবার যুদ্ধ ও কয়েকবার সংঘাতে জড়িয়েছে।