ওষুধের দাম নির্ধারণে সরকারের ক্ষমতা হাইকোর্টে বহাল

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

৩২ বছর আগে ১৯৯৩ সালে সরকারের জারি করা দেশে তৈরি জীবনরক্ষাকারী ৭৩৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ সংক্রান্ত গেজেট পুনর্বহাল করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেন। এর ফলে দেশের অধিকাংশ ওষুধের দাম নির্ধারণের এখতিয়ার উৎপাদনকারীদের পরিবর্তে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে।
রায়ে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক, ডিজি ড্রাগ, ওষুধ মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ১১ ধারায় সরকারকে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। এর ভিত্তিতে ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭৩৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেই ক্ষমতা সীমিত করে মাত্র ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখা হয়। বাকি সব ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে।
ওই প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে। ওই বছরের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান কেন ওই প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার রায় ঘোষণা করা হলো।
শুনানিতে আইনজীবী মোরসেদ বলেন, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম বৃদ্ধি সরাসরি মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের হাতে সীমিত করে দেওয়া নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে। গত ১৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের তালিকা করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। ওই তালিকায় যে সব ওষুধের নাম থাকবে, সবগুলোর দাম সরকারকেই নির্ধারণ করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদের আলোকে নির্দেশ দেন যে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করারও নির্দেশ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *