রাণীনগরের পাখি পল্লী পর্যটন এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন পর্যেবক্ষণ টাওয়ার

আহসান হাবীব শিপলু বিশেষ প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর পর্যটন এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম জেলার রাণীনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিল পর্যটন এলাকা ও পাখি পল্লী। রক্তদহ বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাখির কলতান ও সবুজ পরিবেশ ঘিরে গড়ে উঠছে নতুন সম্ভাবনার এই পর্যটন কেন্দ্র। ইতিমধ্যই দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে পাখি পল্লীখ্যাত এই পর্যটন এলাকা।
বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রক্তদহ বিলের জলকেলির মনোরম দৃশ্য ও পাখির কলকাকলী পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষনীয় বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিশেষ করে ছুটির দিনে এই পর্যটন এলাকায় হাজার হাজার পর্যটকদের আগমন ঘটছে। এই পর্যটন এলাকার আরো প্রসার ঘটাতে, আরো পর্যটকের আগমন ঘটাতে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ও স্থানীয় অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করতে দ্রুত একটি আধুনিক মানের দৃষ্টিনন্দন পর্যেবক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করতে উপজেলাবাসী সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।
এই পর্যটন এলাকাকে আরো আধুনিকায়ন করে কিভাবে পর্যটকবান্ধব করা যায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে আসছে। বিশেষ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়ালের নিজস্ব উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন রক্তদহ বিলের সংযোগখাল রতনডারার উপর নির্মাণ করতে যাচ্ছে একটি আকর্ষনীয় ঝুলন্ত ব্রিজ। এছাড়া পর্যেবক্ষণ টাওয়ার থেকে পুরো রক্তদহ বিলের মনোরম দৃশ্য, হরেক রকমের পাখি ও পুরো পর্যটন এলাকাকে এক পলকে দেখার জন্য পর্যেবক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসক। শীত মৌসুমে এই বিলে আসা হরেক রকমের পাখি দেখতে একটি পর্যেবক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক আজিজুল ইসলাম জানান, মিডিয়ার মাধ্যমে এই পর্যটন এলাকা সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। তাই রক্তদহ বিলের সৌন্দর্য দেখতে পরিবারসহ তিনি এসেছেন। হাতিরপুলের বিস্তীর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা রক্তদহ বিল দীর্ঘদিন ধরে পরিযায়ী পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। শীত মৌসুমে শতাধিক প্রজাতির পাখি এখানে আশ্রয় নেয়। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিলের তীরে দৃষ্টিনন্দন পর্যেবক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের কোন বিকল্প নেই। দর্শনার্থীদের জন্য নির্মিত একটি আধুনিক পর্যেবক্ষণ টাওয়ার এই এলাকায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। তাই পর্যেবক্ষণ টাওয়ার নির্মিত হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা বিলের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন, রক্তদহ বিল শুধু একটি জলাশয় নয়, এটি জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের অমূল্য সম্পদ। পর্যেবক্ষণ টাওয়ারটি নির্মিত হলে পর্যটক ও বিভিন্ন পর্যায়ের গবেষকদের জন্য পর্যটন এলাকাটি একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হবে। ইতিমধ্যেই পর্যেবক্ষণ টাওয়ার নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক স্যার। আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই দৃশ্যমান কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আব্দুল আউয়াল বলেন, জেলার সকল পর্যটন এলাকাকে পর্যটকবান্ধব হিসেবে বিনির্মাণ করতে জেলা প্রশাসন বদ্ধ পরিকর। ইতিমধ্যেই রক্তদহ বিল পর্যটন এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা অব্যাহত রয়েছে। নতুন সংযোজন হিসেবে পাখি পর্যেবক্ষণ টাওয়ারটি নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ও আর্থিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া এই পর্যটন এলাকাকে আরো পর্যটকবান্ধব করার জন্য পর্যায়ক্রমে পর্যটক সেবা কেন্দ্র, বিশ্রামাগার ও সৌন্দর্য বর্ধনমূলক অন্যান্য প্রকল্পও বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যেগুলো বাস্তবায়িত হলে রক্তদহ বিল পর্যটন এলাকা একটি আধুনিক ও আকর্ষনীয় পর্যটন এলাকা হিসেবে বিনির্মাণ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *