শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রি, ছেঁড়া–ফাটা নোট বদল এবং এ–চালানসহ সব ধরনের কাউন্টার সেবা আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) থেকে বন্ধ হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত বিবেচনায় কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ২০ নভেম্বরের পর থেকে সাধারণ গ্রাহকদের এসব সেবা আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাউন্টার থেকে দেওয়া হবে না। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদফতর ও পোস্ট অফিস যেন নির্বিঘ্নে এসব সেবা প্রদান করতে পারে—সে বিষয়ে তদারকি জোরদার করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্বের কোনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকই সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে এ ধরনের সেবা দেয় না। আন্তর্জাতিক প্রথার সঙ্গে সামঞ্জস্য আনতেই বাংলাদেশ ব্যাংক তফসিলি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সেবা গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ধাপে ধাপে ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগীয় অফিসেও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর গত ২২ জুন মতিঝিল অফিসের ক্যাশ বিভাগ পরিদর্শন করেন এবং আধুনিকায়নের লক্ষে করণীয় নির্ধারণে নির্দেশনা দেন। পরে গঠিত কমিটির সুপারিশে গ্রাহকসেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই বিষয়ে ১৮ আগস্ট ও ২২ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও হয়। অতীতে দুজন গভর্নর একই উদ্যোগ নিলেও পরিস্থিতির কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি মতিঝিল অফিসের সার্ভার জালিয়াতির ঘটনায় ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাত এবং আরও ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদফতর ও পোস্ট অফিস থেকেই সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। সব ব্যাংকেই পাওয়া যায় প্রাইজবন্ড ও ছেঁড়া–ফাটা নোট বদল সেবা। তা সত্ত্বেও ভোগান্তিমুক্ত সেবা ও আস্থার কারণে গ্রাহকদের ভিড় বেশি থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে। বর্তমানে গ্রাহকদের হাতে থাকা মোট সঞ্চয়পত্রের পরিমাণ তিন লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি বন্দোবস্ত হয় এই অফিসের মাধ্যমে।
২০ নভেম্বরের পর এসব সেবা শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকেই নিতে হবে।