কোরিয়ার সহায়তায় নদীর পানি মান যাচাইয়ে স্বয়ংক্রিয় মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

ঢাকা কেন্দ্রিক নদীগুলোর পানি মান পর্যবেক্ষণের জন্য আধুনিক, বৈজ্ঞানিক ও সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গ্রিন ট্রানজিশন ইনিশিয়েটিভ (GTI) এ বিষয়ে সরকারকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে। এ উপলক্ষ্যে “স্ট্রেংথেনিং ওয়াটার কোয়ালিটি মনিটরিং সিস্টেম ইন বাংলাদেশ ” শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

প্রকল্পের আওতায় কোরিয়ান বিশেষজ্ঞরা জিআইএস ভিত্তিক দূষণ উৎস শনাক্তকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, যাতে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর প্রধান দূষণ উৎস ও ঘনত্ব চিহ্নিত করা যায়। পাশাপাশি তারা বৈজ্ঞানিক নমুনা সংগ্রহ নির্দেশিকা প্রস্তুত করছেন—যাতে নমুনা সংগ্রহের গভীরতা, নির্দিষ্ট মনিটরিং পয়েন্ট এবং নমুনা সংগ্রহের সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে। ফলে পানি মান পরীক্ষার পদ্ধতিতে বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড নিশ্চিত করা হবে।

প্রকল্পের কাঠামো অনুযায়ী GTI 2026 সহায়তা কার্যক্রমের অধীনে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হবে। এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে ঢাকার নদীব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয় পানি মান পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে, যা ২০২৭ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ডিসেম্বরেই প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং চলতি ধাপের সব কাজের ওপর একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ২০২৬ সালের পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। জাতীয় পর্যায়ে স্বয়ংক্রিয় পানি মান পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা, রিভার হেলথ অ্যাসেসমেন্ট প্রটোকল এবং ‘রিভার হেলথ কার্ড’ চালুর সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় হয়। এছাড়া একটি নদী করিডোরকে পাইলট জোন হিসেবে নির্ধারণের বিষয়েও প্রাথমিক আলোচনা হয়, যাতে মন্ত্রণালয় বা পরিবেশ অধিদপ্তর ঘনিষ্ঠভাবে তদারকি করতে পারে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ; যুগ্ম সচিব লুবনা ইয়াসমিন; উপসচিব ফাহমিদা হক খান ও সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু; পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম। এছাড়া কোরিয়ান দলে উপস্থিত ছিলেন কোরিয়া এনভায়রনমেন্টাল ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউট এর মহাপরিচালক চো জু হিউন; গবেষণা বিশেষজ্ঞ বাইক ইন হোয়ান; ইএমসি কোং লিমিটেডের পরিচালক জুং কিউন জুন; ডেপুটি ডিরেক্টর জং ওয়ান; ম্যানেজার কিম আইয়ন এবং অন্যান্য অংশীদার সংস্থার প্রতিনিধিরা।

বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ বলেন, নদী তীরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষায় পানি মান ব্যবস্থাপনা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি রিয়েল-টাইম মনিটরিং সেন্সর, ডিজিটাল পানি মান তথ্যব্যবস্থা এবং বিভাগগুলোর মধ্যে তথ্য বিনিময় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, কোরিয়ার সহযোগিতা সরকারকে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়তা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *