কৃষি উন্নয়নেই জাতির অগ্রগতিঃ ব্রি’তে ১২১ ধানের জাত উদ্ভাবন,যার ৩৬টি জলবায়ু সহিষ্ণু

মোঃ নূরুল ইসলাম সবুজ গাজীপুরঃ
“দেশের উন্নয়নের জন্য প্রথমে কৃষি উন্নয়ন, পরে শিল্প উন্নয়ন” “সঠিক সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত, টেকসই ধানের উজ্জ্বল দিগন্ত”বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মশালায় এ কথাই তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। তিনি বলেন, ব্রি আজ পর্যন্ত ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৩৬টি জলবায়ু সহিষ্ণু জাত কৃষকের কাছে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।

‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস-ভিত্তিক কৃষি পরামর্শ প্রচারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালাটি মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর ) প্রতিষ্ঠানের ট্রেনিং কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় গণমাধ্যম কীভাবে কৃষকদের কাছে, সময়োপযোগী তথ্য পৌঁছে দিতে পারে আলোচনায় উঠে আসে সেই বিষয়গুলো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রি’র পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মুন্নুজান খানম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এগ্রোমেট ল্যাবের ল্যাবরেটরি কো-অর্ডিনেটর ড. এ বি এম জাহিদ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন পরিচালক (গবেষণা) ও ল্যাবরেটরি চীফ ড. মো. রফিকুল ইসলাম। এছাড়া কর্মশালায় ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা জানান, ব্রি উদ্ভাবিত জলবায়ু সহিষ্ণু বিভিন্ন ধানের জাত লবণাক্ততা, খরা, জলাবদ্ধতা ও ঝড়ে ক্ষতি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ব্রি এ পর্যন্ত ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেন। ইতোমধ্যে ব্রি উন্নত ২২টি ধানের জাত বিদেশে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন পেয়েছে, যা দেশের গবেষণা সক্ষমতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

কৃষকদের সরাসরি সেবা দিতে ব্রি কলসেন্টার ০৯৬ ৪৪৩ ০০৩০০ চালু করেছে, যেখানে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কৃষকরা আবহাওয়া, কীটব্যাধি, জাত নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পাচ্ছেন।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এন টি ভি ও আমার দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার নাসির আহমেদ, সাবেক সভাপতি ও ইত্তেফাকের প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি ও জন কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, কালের কণ্ঠের শামীম আহমেদ, দৈনিক দিনকালের দেলোয়ার হোসেন, দৈনিক সংগ্রামের স্টাফ রিপোর্টার মোঃ রেজাউল বারী বাবুল, দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি মোঃ আমিনুল ইসলাম, প্রথম আলোর মোঃ মাসুদ রানা, প্রতিদিনের সংবাদ প্রতিনিধি হাসমত আলী, দৈনিক নয়া দিগন্তের শেখ মোঃ আজিজুল হক, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক মাহমুদা শিকদার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে কৃষকদের কাছে সঠিক সময়ের সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর বাহন।
উদ্ভাবনী ধান গবেষণায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্য তৈরিতে এই প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *