আনিসুর রহমান সোনারগাঁ প্রতিনিধি :
এক সময় সোনারগাঁয়ের প্রাণপ্রবাহ হিসেবে পরিচিত স্বচ্ছ পানির মারিখালি নদী আজ শিল্পকারখানার বিষাক্ত কেমিকেলের স্তূপে পরিণত হয়েছে। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, অবৈধ কারখানা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে নদীটি এখন কার্যত একটি খোলা ড্রেনে রূপ নিয়েছে।
প্রতিদিন আশপাশের ডাইং, ওয়াশিং, প্লাস্টিক ও অন্যান্য কারখানা থেকে কোনো প্রকার শোধন ছাড়াই সরাসরি রাসায়নিক বর্জ্য ফেলা হচ্ছে মারিখালি নদীতে। কালো, নীল ও লাল রঙের দূষিত পানিতে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে জলজ প্রাণী, হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই বিষাক্ত পানির কারণে মাছ তো দূরের কথা, নদীর ধারে দাঁড়ানোও দায় হয়ে পড়েছে। তীব্র দুর্গন্ধ ও দূষণে আক্রান্ত হচ্ছে আশপাশের কৃষিজমি ও বসতবাড়ি। বহু মানুষ চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো এই ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয় দিনের পর দিন চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। পরিবেশ আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই, নেই কার্যকর নজরদারি বা দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে মারিখালি নদী সম্পূর্ণভাবে মৃত নদীতে পরিণত হবে। অবিলম্বে অবৈধ কারখানা বন্ধ, ইটিপি ছাড়া শিল্পকারখানা পরিচালনা নিষিদ্ধ এবং নদী রক্ষায় জরুরি অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্বচ্ছ পানির নদীকে বিষের কূপে পরিণত করার এই অপরাধ কেবল পরিবেশ ধ্বংস নয় এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা। প্রশ্ন উঠছে, মারিখালি নদী কি শুধু লাশ হয়ে ভেসে থাকার জন্যই বেঁচে থাকবে?