দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রান

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রান করেছে।
প্রথম দিনের প্রথম সেশনে ২ উইকেট শিকার করলেও দ্বিতীয় সেশনে উইকেটবিহীন থাকতে হয় স্বাগতিক বাংলাদেশকে। তবে তৃতীয় সেশনে দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও নাইম হাসানের বোলিং নৈপুন্যে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। শেষ সেশনে ৬৬ রানে ৭ উইকেট শিকার করে টাইগার বোলাররা। তাইজুল ৬০ রানে ৫ ও নাইম ৪২ রানে ২ উইকেট নেন।
চট্টগ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম ১০ ওভার উইকেটের দেখা পায়নি টাইগার বোলাররা।
১১তম ওভারের তৃতীয় বলে জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বাংলাদেশ পেসার তানজিম হাসান। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২১ রান করেন ওপেনার ব্রায়ান বেনেট।
১৯তম ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ২১ রানে তাইজুলের বলে বোল্ড হন ওপেনার বেন কারান। ১১ রানে ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছিলেন কারান।
৭২ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন নিক ওয়েলচ ও সিন উইলিয়ামস। ৩২তম ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ১শতে নেন তারা। পরের ওভারে ওয়েলচ-উইলিয়ামস জুটি বিচ্ছিন্ন করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। উইলিয়ামসকে রান আউটের সেরা সুযোগ হাতছাড়া করে টাইগাররা।
১৬ রানে জীবন পেয়ে ১১৩ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন উইলিয়ামস। অন্যপ্রান্তে ১০৭ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতকের দেখা পান ওয়েলচ।
উইলিয়ামস ও ওয়েলচের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় সেশনে উইকেটবিহীন থাকে বাংলাদেশ। চা-বিরতি পর্যন্ত ২ উইকেটে ১৬১ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। চা-বিরতির পর ক্র্যাম্প সমস্যায় রিটায়ার্ট হার্ড হয়ে ফিরেন ওয়েলচ। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৩১ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে উইলিয়ামসের সাথে ৯০ রানের জুটি গড়েন ওয়েলচ।
ওয়েলচ মাঠ ছাড়ায় ক্রিজে আসেন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। বেশিক্ষণ ঠিকতে পারেননি তিনি। স্পিনার নাঈমের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্কয়ার কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক জাকেরকে ক্যাচ দিয়ে ৫ রানে বিদায় নেন আরভিন।
১ রান পর আবারও উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। নাইমের বলে ফাইন লেগে তানজিমের দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন সেট ব্যাটার উইলিয়ামস। ১৬৬ বল খেলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন উইলিয়ামস। এতে ১৭৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন দুই নতুন ব্যাটার ওয়েসলি মাধেভেরে ও টাফাডজোয়া সিগা। দলের রান ২শ স্পর্শ করে বিচ্ছিন্ন হন তারা।
জাকেরের দারুণ ক্যাচে ১৫ রান করা মাধেভেরেকে বিদায় দেন তাইজুল। দলীয় ২শ রানে জিম্বাবুয়ের পঞ্চম উইকেট তুলে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে বাংলাদেশ। পরের ১৭ রানে আরও ৪ উইকেট শিকার করে টাইগার বোলাররা। এরমধ্যে ৩ উইকেট নেন তাইজুল।
ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ৬ রানে লেগ বিফোর, রিচার্ড এনগারাভাকে শূন্যতে বোল্ড, ওয়েলচকে ৫৪ রানে বোল্ড করেন তাইজুল। অভিষিক্ত ভিনসেন্ট মাসেকেসা ৮ রানে রান আউট হন।
২১৭ রানে নবম উইকেট পতনের পর দিনের বাকী সময় বিপদ ছাড়া পার করেন উইকেটরক্ষক টাফাডজোয়া সিগা ও ব্লেসিং মুজারাবানি। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১০ রানের জুটিতে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে। টাফাডজোয়া ১৮ ও মুজারাবানি ২ রানে অপরাজিত আছেন।
বাংলাদেশের তাইজুল ২৭ ওভার বোলিং করে ৬০ রানে ৫ উইকেট নেন। ৫৩ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে ১৬তম বার ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করলেন তাইজুল। এছাড়া নাইম হাসান ২টি ও তানজিম ১টি উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

জিম্বাবুয়ে : ২২৭/৯, ৯০ ওভার (উইলিয়ামস ৬৭, ওয়েলচ ৫৪, তাইজুল ৫/৬০)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *