শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির লিবারেল পার্টি জয়লাভ করেছে। সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলটি নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডাকে সংযুক্তির হুমকি ও বাণিজ্য যুদ্ধই মূলত নির্বাচনে তাদের জয়লাভকে ত্বরান্বিত করেছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
জরিপ শেষ হওয়ার পর লিবারেলরা পার্লামেন্টের ৩৪৩টি আসনের মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ে বেশি আসন পাবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, যদিও তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট ছিল না যে তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে নাকি সরকার গঠন ও আইন পাস করার জন্য এক বা একাধিক ছোট দলের ওপর নির্ভর করতে হবে।
লিবারেলরা একটি শোচনীয় পরাজয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট কানাডার অর্থনীতির ওপর আক্রমণ শুরু করেন এবং এর সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেন। তিনি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়ার পরামর্শও দেন। ট্রাম্পের পদক্ষেপ কানাডিয়ানদের ক্ষুব্ধ করে এবং তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের উত্থানকে উস্কে দেয়, যা লিবারেলদের নির্বাচনের মোড়কে ঘুরিয়ে দিতে এবং টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় জয়লাভ করতে সহায়তা করে।
বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পলিয়েভ্রে চেয়েছিলেন নির্বাচনটিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা পতনের ওপর একটি গণভোটে পরিণত করতে। এক দশকের শাসনকালে খাদ্য ও আবাসন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গিয়েছিল।
কিন্তু ট্রাম্পের আক্রমণের পর ট্রুডো পদত্যাগ করেন এবং দুইবারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকার কার্নি লিবারেল পার্টির নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হন।
কার্নি ও লিবারেলরা টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়লাভ করে একটি বড় বাধা অতিক্রম করেছে, কিন্তু তাদের সামনে এখনো কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
১৯৮৮ সালের পর থেকে কানাডার কোনো নির্বাচনে বৈদেশিক নীতি এতটা প্রাধান্য পায়নি যতটা এই বছরের নির্বাচনে ছিল। তখন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মুক্ত বাণিজ্যই ছিল প্রধান বিষয়।
তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কানাডার বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ট্রাম্পের সাথে শীতল সম্পর্কের পাশাপাশি কানাডা জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের রফতানির ৭৫ শতাংশেরও বেশি যুক্তরাষ্ট্রে যায়। তাই ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি ও উত্তর আমেরিকার গাড়ি নির্মাতাদের কানাডার উৎপাদন দক্ষিণে সরিয়ে নেয়ার ইচ্ছা কানাডিয়ান অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় কার্নি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মার্কিন পণ্যের পাল্টা শুল্ক থেকে সরকারের আদায় করা প্রতিটি ডলার বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কানাডিয়ান কর্মীদের জন্য ব্যয় করা হবে। তিনি আরো বলেন, তিনি দাঁতের চিকিৎসায়, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কর হ্রাসের প্রস্তাব দেয়ার, অভিবাসনকে টেকসই পর্যায়ে ফিরিয়ে আনার এবং কানাডার পাবলিক ব্রডকাস্টার কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের তহবিল বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছেন।