মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নে ভিজিএফ চালের মাস্টাররোলের তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ভিজিএফ কার্ডধারীদের নিকট চাল বিতরণের শুরুতেই এই ঘটনা ঘটে। ভিজিএফ চালের জন্য কয়েকঘন্টা অপেক্ষার পর, চাল ছাড়াই বাড়ি ফিরেছে কার্ডধারীরা।
জানা যায়, ইউনিয়নে ৭০৩ জন ব্যক্তির মাঝে “অতিদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তার জন্য সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায়” ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে আসন্ন ঈদুল আযহা-২০২৫ উপলক্ষে ১০ কেজি আতপ চাল বিতরণ করার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। এর আগে বুধবার ইউপি সদস্য ও দলীয়ভাবে কার্ড ভাগ করে দেয়ার পর কার্ডধারীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয় ভিজিএফ কার্ড। যেই কার্ড জমা দিলেই মিলবে ১০ কেজি চাল। কার্ডধারীরা কার্ড নিয়ে পরিষদে আসার পর বেশিরভাগ কার্ডেই দেখা যায় কার্ডধারীর কোনো তথ্যই কার্ডে উল্লেখ নেই। কয়েকটি কার্ডে ক্রমিক নম্বর ও নাম উল্লেখ থাকলেও মাস্টারোলের লিস্টের সাথে নেই তার মিল, এটি প্রকাশ পেলে চাল বিতরণ বন্ধ রাখে ট্যাগ অফিসার।
এদিকে ১০ কেজি চালের আশায় সকাল থেকেই পরিষদে আসতে শুরু করে কার্ডধারীরা। বয়স্ক মানুষেরা ব্যাগ হাতে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাদের। অবশেষে খালি হাতেই বাড়ি ফিরে তাঁরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউপি সদস্য বলেন, যে মাস্টাররোলের লিস্টে নাম ও ক্রমিক অমিল দেখা গেছে সেটি তাদের দেয়া লিস্ট নয় এটি ঈদুল ফিতরে বিতরণকৃত লিস্টের তালিকা। তাঁরা আরও বলেন, রাতেই তাদের বন্টনকৃত কার্ড দেয়া হলে পরের দিন বিতরণ করার জন্য বলা হয়। এতে তাদের দ্বারা বিতরণকৃত কার্ডধারী ব্যক্তির নামের তালিকা জমা নেয়ায় বিষয়ে কোন নির্দেশনা দেয়নি ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান।
বিতরণ কমিটির ট্যাগ অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন, তালিকার সাথে ক্রমিক নম্বরের মিল না থাকায় এটা স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা এবং সুষ্ঠভাবে বিতরণের লক্ষ্যে বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখেন।
এ বিষয়ে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলোপ্তগীন মুকুল বলেন, তালিকা না চাওয়ায় তা প্রদান করা হয়নি। তবে তারা (ইউপি সদস্যগণ) যদি বুঝতে না পারে রাতে ফোন করে জানাতে পারতেন। আগের তালিকায় কিভাবে আবারো ভিজিএফ চাল বিতরণ করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটি একজন জনপ্রতিনিধির বিষয়।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তারেক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কার্ড আছে ক্রমিক নম্বর নাই সচিব সাহেবের এটা ভুল হয়েছে। সচিব সাহেবকে মিটিং এর মাধ্যমে বলা হয়েছে স্বচ্ছতার সহিত বিতরণ হবে। যাহোক সচিব সাহেবে ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে বিতরণ তো আর হয়নি সুশৃঙ্খলভাবে বিতরণ করে দিব। কার্ডে ক্রমিক নম্বর বসাতে হবে সচিব সাহেবের চিন্তা করা উচিত ছিল এটা চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাথায় ঢুকবেনা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, তালিকায় অমিলসহ কিছু সমস্যার বিষয়ে জানতে পেরে বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।