লোহার খাঁচায় ৪ সন্তান বয়ে নিয়ে বেড়ানো ঠাকুরগাঁওয়ের দুঃখী জান্নাত পেলো সুখের দোকান

মোঃ শফিকুল ইসলাম দুলাল,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

জীবনের গল্প অনেকাংশে কল্পনাকেও হার মানায়,নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে মানুষকে। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখের সংসার করার স্বপ্ন থাকলেও, সেই স্বপ্ন স্থির হয়না সব নারীর জীবনে। বাস্তবতার কাছে মুখ থুবড়ে দাঁড়ায় সব অনুভুতি।
ঠাকুরগাঁও পরিষদপাড়া কাচাবাজার আড়ৎ এলাকায় লোহার খাঁচাবন্দি ৪ সন্তানদের বয়ে নিয়ে বেড়ানো দুঃখী জান্নাত বেগমের কথকতাও ঠিক তেমনি। সন্তানদের আগলে রাখতে বন্ধুর পথে লড়ে গেছেন যিনি একাই। সমাজের প্রতিকূলতা ভেঙ্গে লোহার খাঁচাবন্দি ৪ সন্তানদের নিয়ে টিকে থাকা সে দুঃখী জান্নাত এবার পেলো সুখের দোকান।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে লোহার খাঁচার ৪ সন্তান বয়ে নিয়ে বেড়ানো জান্নাতের এই সংবাদ প্রচারের পর অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয়। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সমাজের বিত্তশালিরা । ফিরে আসে জান্নাতের স্বামী হাবিল। বুধবার বিকেলে ‘একজন বাংলাদেশ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জান্নাত ও তার স্বামী হাবিলের হাতে “সুখের দোকান” নামের একটি ভ্রাম্যমান মুদির দোকান হস্তান্তর করেন । বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, সাবানসহ,নানা পশরায় সুসজ্জিত এই সুখের দোকানই জান্নাতের আগামীর বেচেঁ থাকার সম্বল। আর তাই আয়ের পথ খুঁজে পেয়ে খুশি জান্নাত ও তার স্বামী।
গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে জান্নাত জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে একদিকে যেমন আমার স্বামীকে ফিরে পেয়েছি অন্যদিকে অনেক মানুষকে আমার পাশে সাহায্যের হাত বাড়াতে দেখেছি। আজ আমি ও আমার স্বামীসহ আমরা পেয়েছি সুখের দোকানের মত আয়ের উৎস। আমার স্বামী এ দোকানটি ভালোভাবে পরিচালনা করলে বাচ্চাদের নিয়ে আমি ভালোভাবে চলতে পারবো।
জান্নাতের স্বামী হাবিল জানান, অভাবের কারনে এতগুলো সন্তানদের ফেলে রেখে আমি চলে গিয়েছিলাম। এখন যেহেতু আয়ের একটা উৎস পেয়েছি, এটাকে আকড়ে ধরেই সন্তানদের আর জান্নাতের পাশে আজিবন থাকবো।
কয়েকজন সাংবাদিক জানান, গণমাধ্যম কর্মীরা এমন হাজারো জান্নাতের দুঃখের কথা তুলে ধরলে কর্পোরেট শ্রেণির লোকেরা মফস্বলের এমন মানুষদের পাশে দাড়ানোর সুযোগ পাবে। এভাবেই বাংলাদেশ হবে সহযোগীতার বাংলাদেশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ‘একজন বাংলাদেশের’ পরিচালক বলেন, আমার মত আরো অনেকেই হাজারো জান্নাতের পাশে দাড়ালে আমার এ ক্ষুদ্র পচেষ্টা সফল হবে বলে আমি মনে করি।
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় ঠাকুরগাঁওবাসী। গনমাধ্যমের বদউলতে এমন হাজারো দুঃখী জান্নাত খুজে পাক এক টুকরো সুখের আশ্রয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *