গাজায় ইসরাইলি অভিযান ‘গণহত্যা’ : শীর্ষ ইসরাইলি মানবাধিকার সংস্থা

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

ইসরাইলের দু’টি শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন- ব’সেলেম এবং ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস ইসরাইল সোমবার বলেছে, গাজায় চলমান যুদ্ধ কার্যত ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। ইসরাইলি কোনো এনজিওর পক্ষ থেকে এই প্রথম এমন অভিযোগ আনা হলো।
জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, সংস্থাগুলো ইসরাইল সরকারের সমালোচনায় আগে থেকেই পরিচিত হলেও সোমবার প্রকাশিত তাদের রিপোর্টে ভাষা ছিল আগের চেয়ে অনেক বেশি তীব্র।
ব’সেলেম-এর নির্বাহী পরিচালক ইউলি নভাক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আপনি কখনোই সেই উপলব্ধির জন্য প্রস্তুত থাকেন না যে আপনি এমন একটি সমাজের অংশ, যেটি গণহত্যায় লিপ্ত। এটা আমাদের জন্য এক গভীর বেদনাদায়ক মুহূর্ত।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যারা এখানে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি হিসেবে বাস করি, প্রতিদিন বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করি, আমাদের স্পষ্টভাবে সত্য বলার দায়িত্ব রয়েছে। ইসরাইল এখন ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরাইলের গাজা আগ্রাসন শুরু হয়। ২১ মাস ধরে চলা এই সঙ্ঘর্ষে গাজার অবস্থা একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
হামাসনিয়ন্ত্রিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৯ হাজার ৮২১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
জাতিসঙ্ঘ বলছে, গাজার প্রতিটি নাগরিক কমপক্ষে একবার হলেও গৃহচ্যুত হয়েছেন এবং দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির হুমকি ক্রমেই বাড়ছে।
২০২৪ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইজিসি) বলেছে, ইসরাইলের অভিযানে ‘গণহত্যা সনদ লঙ্ঘনের’ অভিযোগ ‘যুক্তিযুক্ত’ হতে পারে।
ইসরাইল সরকার এবং তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, তারা হামাসকে ধ্বংস এবং গাজায় বন্দি থাকা ইসরাইলিদের উদ্ধারের জন্যই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
ব’সেলেম বলছে, ইসরাইলের সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তারা ‘গাজায় ফিলিস্তিনি সমাজকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধ্বংস করতে সমন্বিত পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস ইসরাইল জানিয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ‘ইচ্ছাকৃত ও ধারাবাহিক ধ্বংস’ চালানো হয়েছে।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে ইসরাইলি সমাজের ভেতর থেকেই যুদ্ধের বিরুদ্ধে গুরুতর নৈতিক প্রশ্ন তোলা হলো। এটি বিশ্বব্যাপী বিতর্ককে আরো জোরালো করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র : এএফপি/বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *