বিশেষ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিকী কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও তিনজন সাংগঠনিক নির্বাচিত করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক থেকে সভাপতি হিসেবে নেতৃত্বে আসলেন আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু। আর যুগ্ম আহ্বায়ক থেকে সাধারণ সম্পাদক হলেন মামুনুর রহমান রিপন। বাদ পড়লেন সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ। দীর্ঘ ১৫ বছর পর উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ১১ আগস্ট (সোমবার) জেলা বিএনপির আয়োজনে নওগাঁ শহরের কনভেনশন সেন্টারে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ৬৪৭ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু। তিনি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক আহ্বায়ক। ৪০০ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজমুল হক সনি।
আর যুগ্ম আহ্বায়ক থেকে ৬৯২ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মামুনুর রহমান রিপন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ পেয়েছেন ৬৭১ ভোট।
এছাড়া ৮৪১ ভোট পেয়ে ১ নং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন নূর-ই আলম মিঠু, ৬৩০ ভোট পেয়ে ২নং সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন শফিউল আযম ভিপি রানা ও ৫৭৩ ভোট পেয়ে ৩ নং সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন খায়রুল আলম গোল্ডেন।
ইতিমধ্যে বিজয়ীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। এর আগে এদিন দুপুর ১ টায় জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে এই সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে নতুনভাবে দল পরিচালনার পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে বিকেল সাড়ে ৫ টা থেকে ব্যালট পেপারে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। একটানা চলে রাত সাড় ৮ টা পর্যন্ত। জেলার ১৪টি ইউনিটের এক হাজার ৪১৪ ভোটার গোপন ব্যালটের মাধ্যমে জেলা বিএনপির ওই সকল নেতাদের নেতৃত্ব নির্ধারণ করলেন। এতদিন নানা সীমাবদ্ধতায় সম্মেলন করতে না পারলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ ঘটা করে সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি। দীর্ঘ ১৫ বছর পর বিএনপির সম্মেলন ঘিরে পুরো শহর সেজেছিল নেতৃত্বে আসা নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে। এই সম্মেলন ঘিরে ১৭ বছর হামলা, মামলা, নির্যাতন ও কারাবরনে জর্জরিত নেতাকর্মীরা ফিরে পায় প্রাণচাঞ্চল্য।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রেজাউল ইসলাম রেজুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, রাজশাহী বিভাগ বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন এবং বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রেজাউল করিম বাদশাসহ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সন্মেলনে সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাষ্টার হাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান তুহিন, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এস এম মামুনুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ বি এম আমিনুর রহমান।
সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার জন্য লড়েছেন চারজন। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল হক বেলাল।
আর সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদের জন্য আটজন মনোনয়ন তুলেছেন। তারা হলেন শফিউল আযম (ভিপি) রানা, নূর-ই আলম, ফরিদুজ্জামান, খায়রুল আলম, শবনম মোস্তারী, সুলতান মামুনুর রশিদ, কামরুজ্জামান কামাল ও জহুরুল হক।
এদিকে এই সম্মেলনের আগের দিন রোববার নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সম্মেলনের কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকাকে ‘বিতর্কিতথ উল্লেখ করে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম বেলাল।