কিংবদন্তী শিল্পী ফরিদা পারভীনের দাফন হবে কুষ্টিয়ায়

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনকে কুষ্টিয়ায় দাফন করা হবে ।

এর আগে তাঁর মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে।

এখান থেকে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর তাঁকে নেওয়া হবে কুষ্টিয়ায়। সেখানে বাদ মাগরিব নামাজে জানাজা শেষে কুষ্টিয়ার পৌর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।

ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম নিমেরি উপল সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাকে আমরা কুষ্টিয়ায় দাফন করব, তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী।’

মেয়ে জিহান ফারিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘মা মর্যাদা নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তার শেষ ইচ্ছে ছিল কুষ্টিয়া যাওয়ার। উনার বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করার শেষ ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন তিনি।’

বরেণ্য এই সঙ্গীত শিল্পী গতকাল রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পরে তাঁর মরদেহ রাতে হাসপাতাল থেকে তেজগাঁওয়ের বাড়িতে নেওয়া হয় ।

গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ফরিদা পারভীনকে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়ার পরই নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে। পরে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি।

ফরিদা পারভীন বেশকিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাঁকে।

১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন গানে গানে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। তাঁকে পার হতে হয়েছে অনেক চড়াই-উৎরাই। পারিবারিক সূত্রেই গানের ভুবনে আসা। গানের প্রতি বাবার টান ছিল বেশি। দাদিও গান করতেন। বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছে তাঁকে।

সংগীত জগতে ফরিদা পারভীনের পথচলা শুরু ১৯৬৮ সালে, রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে তিনি খ্যাতি পান। পরবর্তী সময়ে সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে লালনগীতির তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক পান।

এর বাইরে ১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ২০০৮ সালে জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন। কেবল লালনের গানই নয়, তার কণ্ঠে বেশ কটি আধুনিক ও দেশের গানও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।

লালনকন্যা খ্যাত ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যবৃন্দ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *