উপদেষ্টারা নিশ্চিতভাবে জানেন তাঁদের কোনো সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নেই-আইন উপদেষ্টা

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমানে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে নানান রকম কথাবার্তা হলেও উপদেষ্টারা ভালোভাবেই জানেন তাঁদের কোনো ‘সেফ এক্সিট’ এর দরকার নেই।

উপদেষ্টা আজ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে একথা বলেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর মোট চারটি অধিবেশনে উক্ত অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে আলোচকরা বিভিন্ন পরামর্শ তুলে ধরেন। এর আগে বিভাগীয় পর্যায়েও এই অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এসব পরামর্শ সভার আয়োজন করে।

উপদেষ্টা বলেন, গত ৫৫ বছর আমরা যে দুঃশাসন, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখলাম, দেখলাম ব্যাংক থেকে সাধারণ মানুষের আমানতের টাকা লুট হচ্ছে-এ ধরনের একটি ভয়াবহ, অসুস্থ ও আত্মধ্বংসী রাষ্ট্র কাঠামো থেকে আমাদের এ জাতির সেফ এক্সিট-এর প্রয়োজন রয়েছে ।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে বলা হয়েছিলো যে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করবেন, যেন এতে রাজনৈতিক প্রভাব না থাকে। কিন্তু আপনারা সবাই জানেন, রাষ্ট্রপতি কখনো স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দিতে পারেননি, এদেশে সবসময় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী।

আসিফ নজরুল বলেন, আমরা এমন প্রধান বিচারপতিও পেয়েছি, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র ধ্বংস করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যারা নিজের চোখে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখেও তা উপেক্ষা করেছেন। যে সকল বিচারক মানবাধিকার লঙ্ঘনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে, তাদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। দুঃখজনকভাবে এদের কেউ কেউ এখনো বিচার বিভাগে রয়ে গেছে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। আমরা ইনস্টিটিউশনাল রিফর্ম এর পথে কিছুটা অগ্রসর হয়েছি, পুরোটা করতে পারি নাই। পরের যারা নির্বাচিত সরকার হবেন, তাঁদের কাছে এই দায়িত্বটা থাকলো।

কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় কমিটি। জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সংশোধিত আইনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং স্বাধীনতাকে আরো শক্তিশালী করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো সিগফ্রেড রেংগলি, ডেনিশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অফ মিশন এন্ডার্স বি. কার্লসেন, ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনডিপি) রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলারসহ আরো অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *