মোঃনূরুল ইসলাম সবুজ গাজীপুরঃ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,
দেশ নিয়ে বর্তমানে নানা ষড়যন্ত্র চলছে, বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। যারা এই বিভেদে মেতে আছে, তারা কারও মঙ্গল করছে না। তিনি বলেন, “আলোচনা হতে পারে, মতবিনিময় হতে পারে, কিন্তু বিতর্ক আর বিভেদে জড়ানো যাবে না। ঐক্যের শক্তি হারালে আন্দোলনের অগ্রগতি থেমে যাবে। বিভাজন হলে কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবেনা। তাই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
রিজভী বলেন, “অনেক সুরঙ্গ খোঁড়া হচ্ছে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে যিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এমন গভীর চক্রান্ত চলছে, ষড়যন্ত্র হচ্ছে যার লক্ষ্য হলো ৫ আগস্টের অর্জন ব্যর্থ করা।
শনিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনুস একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গুণীজন, কিন্তু তার সময় এমন চাঁদাবাজি বা কলকারখানা বন্ধ থাকার কথা নয়। এখন কেন শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কেন আড়াই লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়ছে—এটাই জনগণের প্রশ্ন।
যারা ২৪ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জন্য পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে, অথচ আগে থেকেই তাদের ধানমন্ডিতে বাড়ি ছিল—এখন মানুষ এসব থেকে মুক্তি চায়।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন, অথচ সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। ঢাকায় ও গাজীপুরে সবজির দাম বাইরে থেকে পাঁচগুণ বেশি নেওয়া হচ্ছে চাঁদাবাজি ও হাতবদলের কারণে। অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। তাই তিনি চাঁদাবাজ ও অন্যায়কারীদের গ্রেফতারের আহবান জানান।
তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “বিএনপি এমন একটি দল যেখানে সৎ, পরিশ্রমী ও জনবান্ধব মানুষ স্থান পাবেন। সমাজে যারা সন্ত্রাসী, অপকর্মে লিপ্ত বা আতঙ্ক সৃষ্টি করে, তারা বিএনপির সদস্য হতে পারবে না। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র ও পেশাজীবী—সবাইকে আমরা দলে চাই, কিন্তু অপরাধী, ফ্যাসিস্ট,আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপিতে কোনো জায়গা নেই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল ইসলাম, ডঃ মাজহারুল আলম,কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি জাকির হোসেন নান্নু, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডাক্তার তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ মহানগর বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী।
এর আগে প্রধান অতিথি রুহুল কোভিদ রিজভী সদস্যদের হাতে সদস্য ভর্তি ফরম তুলে দেন এবং বিভিন্ন থানা কমিটির হাতে সদস্য ভর্তি ফরম বুঝিয়ে দেন নতুন সদস্য সংগ্রহ করার জন্য।
অনুষ্ঠান শেষে তিনি পার্শ্ববর্তী চিলাই নদীতে মাছের পোনা অমুক্ত করেন।