তরিকুল ইসলাম:
ঢাকা ৯ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেছেন, আমরা আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশে ফিরে এসেছেন। তিনি একটি সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন, যা কেবল বিএনপির নয় সমগ্র বাংলাদেশের পরিকল্পনা। যুব সমাজকে এক জোট হয়ে তারেক রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।
সোমবার ২৯ ডিসেম্বর রাজধানীর মাদারটেক আব্দুল আজিজ স্কুল এন্ড কলেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল উদ্যোগে ঢাকা ৯ আসনে দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাবিব বলেন,এই বাংলাদেশের মানচিত্র, পতাকা ও ভৌগোলিক সীমারেখা অর্জনের জন্য লাখো শহীদের রক্ত দিতে হয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অসংখ্য সহযোদ্ধা রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছেন। অনেকেই আজও নিখোঁজ, অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, কেউ কেউ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন শুধুমাত্র এই দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ। তাঁর সুস্থতার জন্য সারাদেশের মানুষ দোয়া করছেন। আমরা চাই, আগামী দিনের নতুন বাংলাদেশের শুভ সূচনা তাঁর হাত ধরেই হোক।
তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করা সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আজ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরে এসেছেন, কিন্তু তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই তিনি নিরাপদ থাকুন এবং তাঁর নেতৃত্বেই আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়িত হোক।
তিনি সদ্য নিহত সহযোদ্ধা শহীদ ওসমান শরীফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার দাবি করেন এবং তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা সবসময় রাজপথে থাকবে। আমাদের মূল স্বপ্ন বাংলাদেশ। আমাদের মূল স্বপ্ন বাংলাদেশের মানুষ। আমাদের মূল স্বপ্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্বপ্নের বাংলাদেশ যা গড়ে উঠবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে।
তিনি ছাত্রদল ও দলের যুবসমাজকে সতর্ক করে বলেন, “আমরা যে মিছিল করি, সেই মিছিল মিটিংয়ের মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এলাকাভিত্তিকভাবে বসে বসে শুধু মোড়ে মোড়ে আড্ডা দেওয়ার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই না। এই বাংলাদেশের জন্য এত সহযোদ্ধা রক্ত দিয়েছেন তাই আমাদের আগে নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। আমাদেরকেই পরিবর্তিত হতে হবে।
যুবসমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা যারা আজ এখানে উপস্থিত আছো ইনশাল্লাহ তোমরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। তোমরা যদি নিজেদের ধ্বংস করে ফেলো, তাহলে শুধু তোমরাই ধ্বংস হবে না জাতীয়তাবাদী দল ধ্বংস হবে, এই এলাকা ধ্বংস হবে। এই এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশ ও দলের ধ্বংসকারীদের আমরা বরদাস্ত করব না।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দিকনির্দেশনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আগামী দিনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান, তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই ধরনের কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত থাকলে তাদের কোনো আশ্রয় বা প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কেউ যদি দল বা দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তা মেনে নেওয়া হবে না।
তিনি যোগ করেন, সুতরাং আমাদের ঈমানদারির মাধ্যমে কাজ করতে হবে। নিজের কাজ এমনভাবে করতে হবে, যেন আমার কাজ দেখে আমার পরিবার, আমার সমাজ এবং আমার দেশ আগামীর ভবিষ্যতে শিক্ষা নিতে পারে। সেই ব্যবস্থাটাই আমাদেরকেই গড়ে তুলতে হবে।
হাবিবুর রশিদ হাবিব বলেন, “তোমাদের অনেকের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের পথচলা। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তোমরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছো, কারাগারে গিয়েছো। আমি তোমাদের নেতা হতে চাই না আমি তোমাদের সহযোদ্ধা হতে চাই, ভাই হতে চাই। সুখে-দুঃখে সবসময় তোমাদের পাশে থাকতে চাই।
তিনি ছাত্রদলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অনুসরণ করি এবং তোমাদের সঙ্গে সবসময় থাকতে চাই। আমরা চাই, তোমরা সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখো। যদি তোমাদের দ্বারা সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমরা তোমাদের পাশ থেকে সরে যাব তবে তার আগে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যেন তোমরা সেই ভুল পথ থেকে ফিরে আসো। কারণ বারবার বলছি তোমরাই আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, তোমরাই ঢাকা–৯-এর আগামীর ভবিষ্যৎ।
ভবিষ্যতের নেতৃত্ব নিয়ে তিনি বলেন, সামনে যারা বসে আছো। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ইনশাল্লাহ তোমরাই আগামী দিনে ঢাকা–৯-এর এমপি হবে, মন্ত্রী হবে এবং এই এলাকাকে গড়ে তুলবে।
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মজুমদার এর সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক ১নং সহ-সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আজিমুল হাসান চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদল ইফতেখার উদ্দিন ফয়সল,
১নং সহ-সভাপতি, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদল আরমান হোসেন বাপ্পি, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল মোহাম্মদ আল-আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রদল ডা. এইচ. এম. মিজানুর রহমান, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ঢাকা কলেজ ছাত্রদল শাহপরান, সহ-সভাপতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল আরিফুল ইসলাম প্রান্ত, সহ-সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল মাহবুব আলম শাহিন,অর্থ সম্পাদক ছাত্রদল ইকরাম খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক স্যার এ.এফ. রহমান হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল মেহেদী হাসান মুন্না, সদস্য সচিব ফজিলতুন নেসা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল জান্নাতুন ফেরদৌস ইতি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলসাইমা বিনতে কবির ও আহ্বায়ক সবুজবাগ থানা ছাত্রদল রাফাত জামান গাফফার সহ প্রমুখ।