শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
সেরিব্রাল স্ট্রোক এবং হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন খ্রিষ্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকানের চিকিৎসক আন্দ্রেয়া আর্কাঞ্জেলি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সোমবার ইস্টারে ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়, মৃত্যু সনদে উল্লেখ করা হয়েছে, মৃত্যুর আগে সোমবার সকালে কোমায় চলে যান পোপ ফ্রান্সিস। এরপর স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে মৃত্যু হয় তার।
সনদে আরও বলা হয়, রোমান ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাসে প্রথম কোনো পোপের নিজ বাসভবনের অ্যাপার্টমেন্টে মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেই ইস্টার সানডে উপলক্ষ্যে হাজার হাজার ইস্টার উপাসকদের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের বারান্দা থেকে হাত নেড়ে অভ্যর্থনা জানান পোপ ফ্রান্সিস। তাকে হুইলচেয়ারে ওই সভায় নিয়ে যান তার একজন সহকারী। যার সহায়তায় তিনি সমবেত মানুষের উদ্দেশে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান।
ফ্রান্সিস টানা ১২ বছর পোপের পদে ছিলেন। এসময় নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি সপ্তাহগুলোতে তার রোগের মাত্রা বেড়ে যায়। ছোট বেলা থেকেই নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন। যা সম্প্রতি প্রাণঘাতী পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে এই রোগের জন্য ৩৮ দিন রামের জেমেলি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের বিছানায় ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস।
মৃত্যু সনদে চিকিৎসক আরও উল্লেখ করেছেন, ফ্রান্সিসের ধমনীতে উচ্চ রক্তচাপের ফলে একাধিক ব্রঙ্কাইকটেসিস এবং টাইপ২ ডায়াবেটিসেও ভুগছিলেন। যে খবর আগে প্রকাশ করা হয়নি।
ভ্যাটিকান ফ্রান্সিসের আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের লেখা একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে। সেখানে পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, তিনি ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নয় বরং রোমের সেন্ট মেরি মেজরের ব্যাসিলিকায় সমাহিত হতে চান। যদিও তার অনেক পূর্বসূরী সন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় সমাহিত হয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, তিনি বিশেষ কোনো সাজসজ্জা ছাড়াই মাটিতে সমাহিত হতে চেয়েছিলেন।
২০২২ সালের ২৯ জুন লেখা ওই চিঠিতে পোপ ফ্রান্সিস লিখেছেন, আমার পার্থিব জীবনের গোধূলী ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এবং অনন্ত জীবনের দৃঢ় আশা নিয়ে আমি কেবল আমার সমাধিস্থল সম্পর্কে শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করতে চাই। যারা আমাকে ভালোবাসে এবং আমার জন্য প্রার্থনা করে চলেছেন, তাদের সকলকে প্রভু উত্তম পুরষ্কার দান করুন।