শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তার প্রশাসনে চরম খ্রিস্টান ডানপন্থীদের প্রভাব লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। এদের অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন নীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলছেন এবং অঞ্চলটির সঙ্কট আরো জটিল করে তুলছেন।
খ্রিস্টান জায়নবাদের সাথে সম্পৃক্ত এই ব্যক্তিরা সাধারণত ইসলাম, ফিলিস্তিন ও ইরানবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। একইসাথে তারা ইসরাইলের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন দেন।
এখানে আমরা এমন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে তুলে ধরছি, যারা ট্রাম্পের নীতিগত সিদ্ধান্তে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন এবং মার্কিন প্রশাসনে ইসলামবিরোধী বক্তব্যকে আরো প্রবল করে তোলেন।
প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর পিট হেগসেথ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তখন তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ২০০৩ সালে স্নাতক শেষে কিছুদিন আর্থিক বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছেন। পরে তিনি সেনাবাহিনীতে পূর্ণ সময়ের জন্য যোগ দেন। ‘ওহাবি‘ দমন করার আকাঙ্ক্ষাকে তার এই সিদ্ধান্তের ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০০৪ সালে গুয়ান্তানামো বে-তে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তিনি ‘বিরক্তিকর‘ বলে উল্লেখ করেন। কারণ তার মতে সেখানে মূলত ‘ইসলামবাদী অপরাধীদের‘ রক্ষা করতেই তাকে কাজ করতে হয়েছে। ২০০৫ সালে ইরাকে মোতায়েন হয়ে তিনি যুদ্ধের নিয়ম অমান্যের নির্দেশ দেন এবং আইনের তোয়াক্কা না করে যেকোনো সম্ভাব্য হুমকিকে দমন করতে বলেন।
২০১২ সালে তিনি আফগানিস্তানে মার্কিন কাউন্টারইনসার্জেন্সি একাডেমির সিনিয়র প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে পার্ল হারবারে সেনা প্রশিক্ষণ চলাকালীন তার বাহুতে দেখা যায় একটি আরবি ট্যাটু -‘কাফের‘ শব্দটি- যার নিচে ল্যাটিন ভাষায় লেখা ছিল ‘Deus Vult‘ অর্থাৎ ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা‘, যা ছিল মধ্যযুগীয় ক্রুসেডারদের স্লোগান।
পিট হেগসেথ ইসলামকে একটি আক্রমণাত্মক ধর্ম হিসেবে চিহ্নিত করেন। তার বই The American Crusade-এ তিনি স্পষ্টভাবে এই দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন এবং ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের ‘আধুনিক ক্রুসেড‘ পরিচালনার পক্ষে মত দেন। তার আরেক বই In the Field-এ তিনি লেখেন, ‘ইসলাম, বিশেষ করে ইসলামবাদ, একটি বদ্ধ ও অনমনীয় ধর্মীয় ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে গঠিত।‘
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার
স্টিফেন মিলার ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ইহুদি পরিবারে বেড়ে ওঠেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি হোয়াইট হাউসে নীতি ও স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টার ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তার কঠোর ডানপন্থী মতাদর্শ এবং বিশেষত ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত।
তিনি ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা‘ নামক নির্বাহী আদেশের প্রধান রূপকার ছিলেন, যার ফলে সাতটি মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয় এবং শরণার্থী কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
কলেজে পড়ার সময় থেকেই মিলার ইসলামের বিরুদ্ধে নিজের আদর্শিক অবস্থান গড়ে তোলেন। তিনি ‘সন্ত্রাসবাদ সচেতনতা প্রকল্প’ নামের একটি উদ্যোগ শুরু করেন; যার উদ্দেশ্য ছিল তথাকথিত ‘ইসলাম-ফ্যাসিবাদের হুমকি’ উন্মোচন করা। এই প্রকল্পের আওতায় এমন ভিডিও প্রদর্শিত হতো, যা পুরো ইসলামকেই সহিংসতা ও সম্প্রসারণবাদের সাথে যুক্ত করতো।
মিলার একাধিক লেখায় দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘ইসলাম-ফ্যাসিবাদের‘ বিরুদ্ধে একটি অস্তিত্বগত যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে এবং বামপন্থী চিন্তাধারার আধিপত্যের কারণে এই হুমকি যথাযথভাবে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তিনি ইরাক আক্রমণের পক্ষে মত দিয়ে বলেন, এটি ছিল উগ্র ইসলামী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে একটি বৈধ প্রতিক্রিয়া।
পরে হোয়াইট হাউসে যুক্ত হয়ে মিলার মুসলিম নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের সতর্কতা উপেক্ষা করে তিনি কট্টর ডানপন্থী ও মুসলিমবিরোধী উৎসের উপর নির্ভর করেন। এছাড়া তিনি বর্ণবাদী ও মুসলিমবিরোধী ওয়েবসাইট যেমন VDARE ও American Renaissance-এর সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সেখানকার লেখা হোয়াইট হাউসে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
তিনি মসজিদ ও ইসলামিক কেন্দ্রগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন এবং একে ‘আমেরিকান পরিচয় রক্ষার কর্তব্য‘ হিসেবে উপস্থাপন করতেন। আজও তিনি ট্রাম্পের ছায়াসঙ্গী হিসেবে প্রায় সব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন এবং ট্রাম্পের বিভিন্ন পোস্টেও প্রকাশ্যে মত দেন।
তার অবস্থান ও হোয়াইট হাউসে প্রভাব মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে ট্রাম্পের অবস্থান নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মাইক হাকাবি : রাষ্ট্রদূত পদমর্যাদার একজন পুরোহিত!
২০২৫ সালের ৯ এপ্রিল মার্কিন সিনেট অল্প ভোটের ব্যবধানে আরকানসাসের সাবেক গভর্নর ও খ্যাতনামা ধর্মপ্রচারক মাইক হাকাবিকে ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে অনুমোদন দেয়। এ নিয়োগকে ট্রাম্প প্রশাসনের ধর্মীয় ইহুদিবাদী শাখার একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হয়। হাকাবি দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাইলপন্থী খ্রিস্টান আন্দোলনের মুখপাত্র, যিনি মার্কিন-ইসরাইল সম্পর্ককে কেবল কূটনৈতিক নয়, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও ব্যাখ্যা করেছেন- ইসরাইলকে সমর্থন যেন এক ধর্মীয় কর্তব্য।
সিনেট শুনানিতে হাকাবি নিজেকে মাঝামাঝি অবস্থানে রাখার চেষ্টা করেন এবং বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির প্রতিনিধিত্ব করবেন, নিজের ব্যক্তিগত মতের নয়। কিন্তু তার আগের বক্তব্য ও সাক্ষাৎকারে ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিরূপ মনোভাব স্পষ্ট ছিল।
২০২৫ সালের ১০ জুন ব্লুমবার্গকে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না- আমেরিকার লক্ষ্য একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র।’ বরং তিনি পশ্চিমতীরের বদলে অন্য কোনো মুসলিম দেশে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত দেন। তিনি পশ্চিমতীরকে ‘জুডিয়া ও সামেরিয়া’ নামে উল্লেখ করেন।
বসতি স্থাপন নিয়ে হাকাবির অবস্থান অত্যন্ত জোরালো। তিনি স্পষ্টভাবে ইসরাইলি বসতিগুলোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, পশ্চিমতীরকে ‘ইহুদি শহর ও পাড়া‘ বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু দখলদারিত্ব স্বীকার করতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
ইরান ইস্যুতে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম প্রধান বাজপাখি। একাধিকবার তিনি ট্রাম্পকে প্রবল আক্রমণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ট্রাম্প যেন ‘স্বর্গের কণ্ঠ‘ শুনে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। এটি শুধুই আলঙ্কারিক ভাষা ছিল না; বরং মধ্যপ্রাচ্যের সংঘর্ষকে এক ভবিষ্যদ্বাণীমূলক আধ্যাত্মিক পর্ব হিসেবে দেখার বিশ্বাসের প্রকাশ, যা অনেক খ্রিস্টান ইহুদিবাদীদের মধ্যে প্রচলিত।
ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার সময় হাকাবি বারবার সক্রিয় মার্কিন হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন। নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এবং সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। কিছু সূত্র অনুযায়ী, তিনি ‘আধ্যাত্মিক প্রতিরোধ’ বার্তার আড়ালে পারমাণবিক বিকল্পেরও ইঙ্গিত দেন।
তিনি ট্রাম্পকে একটি ধর্মীয় ভাষায় লেখা চিঠি পাঠান, যেখানে ইরানে হামলার সিদ্ধান্তকে ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলার সিদ্ধান্তের সাথে তুলনা করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ঈশ্বর আপনাকে রক্ষা করেছেন। এই শতাব্দীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আল্লাহ আপনাকে মনোনীত করেছেন। সম্ভবত কখনো কেউ এতো গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।’
গাজা প্রসঙ্গে হাকাবি এক শর্তসাপেক্ষ মানবিক প্রচেষ্টা চালান, যা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল জোটকে কৌশলগতভাবে মজবুত করার লক্ষ্যে পরিচালিত বলে মনে হয়েছে।
হাকাবির বিপজ্জনক দৃষ্টিভঙ্গি কেবল তার রাজনৈতিক অবস্থানে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তার আদর্শিক ভিত্তিতেও নিহিত। তিনি ইসরাইলকে সমর্থন করেন বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীর আলোকে, মধ্যপ্রাচ্যকে এক চূড়ান্ত আধ্যাত্মিক সংঘর্ষের মঞ্চ হিসেবে দেখেন।
খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদের রূপকার রাসেল ভট
রাসেল ভট বর্তমানে (২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে) হোয়াইট হাউসের ব্যবস্থাপনা ও বাজেট অফিসের পরিচালক। এর আগে তিনি ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নিজেকে ‘খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদী‘ হিসেবে পরিচয় দেন এবং আমেরিকান সমাজ ও সরকারে খ্রিস্টীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী।
২০১৭ সালের সিনেট শুনানিতে ইসলাম সম্পর্কে তার মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স তাকে প্রশ্ন করেন, মুসলিমরা ঈশ্বরকে জানে না। কারণ তারা যীশু খ্রীষ্টকে অস্বীকার করেছে। এই ধারণা কি গোঁড়ামিপূর্ণ? ভট উত্তর দেন, তিনি শুধু একজন খ্রিস্টান হিসেবে মত প্রকাশ করছেন। একই সময়ে তিনি ‘ইসলামফোবিয়া’ শব্দটিকেও প্রত্যাখ্যান করেন।
ইলিনয়ের উটন কলেজের অধ্যাপক ড. লরিসা হকিন্সকে বরখাস্তের পক্ষেও ভট মত দেন। কারণ তিনি বলেছিলেন, ‘খ্রিস্টান ও মুসলিমরা একই আল্লাহর উপাসনা করে।’ ভট একে খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী দাবি করেন এবং আন্তঃধর্মীয় সহিষ্ণুতাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেন। এতে ভটের বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ ওঠে।
বিশ্লেষকরা তার অবস্থানকে খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদের প্রতিফলন হিসেবে দেখেন, যেখানে ‘ঈশ্বরের ইচ্ছার অধীনে রাষ্ট্র’ ধারণা প্রচারিত হয়। এই আদর্শ কেবল ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাসে সীমাবদ্ধ নয়, বরং মুসলিমদের জনপরিসর থেকে সরিয়ে দিতে চায়। যদিও এটি সরকার ও ধর্মের প্রাতিষ্ঠানিক বিভাজনের কথা বলে।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, এই দৃষ্টিভঙ্গি ‘প্রজেক্ট ২০২৫’-এর উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যার লক্ষ্য হলো মার্কিন আমলাতন্ত্রকে ধর্মীয় রক্ষণশীলতা অনুসারে পুনর্গঠন করা এবং ইসলামপন্থী বা মুসলিমসংলগ্ন গোষ্ঠীগুলোকে রাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে বাদ দেয়া।
ফেইথ অফিসের প্রধান পাউলা হোয়াইট
পাউলা হোয়াইট কেইন একজন প্রভাবশালী টেলিভিশন যাজক এবং ক্যারিশম্যাটিক খ্রিস্টান নেত্রী, যিনি ইংরেজি ইভাঞ্জেলিকাল জগতে সুপরিচিত। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অঙ্গনে ব্যাপক প্রভাব রাখেন।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে হোয়াইট হাউসের Faith Office-এর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। তার দায়িত্ব ছিল ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপন। হোয়াইট ইসরাইলের প্রতি তার দৃঢ় সমর্থনের জন্য পরিচিত। তিনি ‘সমৃদ্ধি ধর্মতত্ত্ব’র একজন প্রবক্তা, যার মতে দান ও যাকাতের বিনিময়ে সমৃদ্ধি ও সুস্থতা লাভ সম্ভব।
তবে সমালোচকরা তাকে চরমপন্থী খ্রিস্টান জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতিনিধি বলে মনে করেন। ইসলামসহ অন্যান্য ধর্মের প্রতি তার মনোভাব অনেক সময় অবজ্ঞাপূর্ণ বলেও অভিযোগ আছে।
Faith Office পর্যবেক্ষণকারী এক গবেষকের মতে, অফিসটির আরো অনেক সদস্যই ইসলামবিরোধী মনোভাব পোষণ করেন এবং ইসরাইলের প্রতি সমর্থনকে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ হিসেবে দেখেন।
জাতীয় প্রার্থনা দিবসসহ হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হোয়াইট এমন নেতাদের সাথে অংশ নেন যারা ইসরাইলের প্রতি আধ্যাত্মিক সমর্থন প্রকাশ করেন এবং রাজনৈতিক ইসলামকে শত্রু হিসেবে তুলে ধরেন।
তিনি ‘খ্রিস্টান রাষ্ট্র‘ ধারণাকে একটি জাতীয় পরিচয় হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং বলেন Faith Office-এর কাজ খ্রিস্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করা, এমনকি ‘ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাত‘ প্রতিহত করাও এর লক্ষ্য।
ইসরাইলের সাথে তার সম্পর্ক ‘খ্রিস্টান-ইহুদিবাদী জোট‘ মডেলের প্রতিফলন। ২০১৭ সালে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরকে তিনি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বদলে ‘ধর্মীয় কর্তব্য‘ হিসেবে বর্ণনা করেন।
ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফেরার কয়েক মাস আগে হোয়াইট তার ওয়েবসাইটে ‘কেন আমরা ইসরাইলের সাথে দাঁড়িয়ে আছি‘ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি এই সমর্থনকে ধর্মীয় কর্তব্য হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
সূত্র : আল জাজিরা