হাতি সংরক্ষণে আবাসস্থল রক্ষা, করিডোর মুক্তকরণ ও সচেতনতা জরুরি

এম হাফিজুল ইসলাম(হাফিজ):

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, হাতি সংরক্ষণে হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ, হাতির উপযোগী গাছ লাগানো এবং করিডোর চিহ্নিত করে মুক্ত রাখা হবে। তিনি বলেন, জরিপের মাধ্যমে হাতির সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ এবং মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

বন ভবনে আজ বিশ্ব হাতি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ক্যাপটিভ হাতি নিয়ন্ত্রণ, গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করা এবং হাতির জন্য টেকসই আবাসস্থল নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি বলেন, হাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫০ হেক্টর জমিতে হাতির খাদ্যোপযোগী গাছের বাগান, ৫০ হেক্টর বাঁশবাগান সৃজন এবং রোপিত উদ্ভিদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য ইকোলোজিক্যাল বাউন্ডারী বায়োফেন্সিং নির্মাণ করা হবে। এতে বেত, লেবু ও বড়ইসহ কাঁটাজাতীয় জীবন্ত বেড়া দিয়ে ১০ কিলোমিটার সীমানা তৈরি হবে। একইসঙ্গে এলিফ্যান্ট রিজার্ভ-সংলগ্ন এলাকায় ‘অ্যান্টি ডেপ্রেডেশন স্কোয়াড (এডিএস), এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) ও এলিফ্যান্ট রেসকিউ টিম’ গঠন করে কার্যক্রম জোরদার করা হবে। হাতির চলাচল পর্যবেক্ষণে ১৬টি ট্রি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে এবং গাজীপুর সাফারি পার্ক ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে দুটি হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, আহত হাতির চিকিৎসার জন্য সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও শেরপুর অঞ্চলে অস্থায়ী শেড নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে এনথ্রোপোজেনিক প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপণ এবং নৃ-বৈজ্ঞানিক জরিপ পরিচালনা করা হবে। চট্টগ্রামের চুনতিতে দশ একর জায়গা জুড়ে একটি হাতি অভয়ারণ্য স্থাপন করা হবে, যেখানে পোষা হাতিদের পুনর্বাসন করা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: খায়রুল হাসান; দুবাই সাফারি পার্কের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ওয়াইল্ডলাইফ স্পেশালিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম মনিরুল এইচ খান; বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক (কেন্দ্রীয় অঞ্চল) এ. এস. এম. জহির উদ্দিন আকন; আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ও হাতি বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব এবং বন সংরক্ষক (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল) মো: ছানাউল্যা পাটওয়ারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *