বদলগাছীতে কাগজে কলমে রাস্তা, বাস্তবে নেই কোনো রাস্তা!

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর বদলগাছীতে টি.আর প্রকল্পের আওতায় রাস্তা সংস্কারের নামে বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে কলমে রাস্তা দেখানো হলেও বাস্তবে নেই কোনো রাস্তা। ফলে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা বছরের পর বছর যাতায়াতের চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের সেনপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের (গুচ্ছগ্রামের) রাস্তা সংস্কারের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে টি.আর প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। উক্ত বরাদ্দের টাকায় রাস্তার কোনও কাজ না করেই টাকা ভাগাভাগি করে নেন প্রকল্পের দায়িত্বশীলরা।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায়, গুচ্ছগ্রামের মানুষ ঘর পাওয়ার পর থেকেই যাতায়াতের জন্য কোনো রাস্তা পাননি। একাধিক ভুক্তভোগী জানান, আমরা এসিল্যান্ড ও ইউএনও সাহেবকে জানিয়েছিলাম, তারা রাস্তা করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও রাস্তার কোনো কাজ হয়নি। এই প্রথম আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাদের গুচ্ছগ্রামের রাস্তা সংস্কারের জন্য দেড় লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে এবং রাস্তার কাজও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এখানে রাস্তার কোনও কাজই হয়নি। এমনকি এই আড়াই বছরে কোনও মেম্বার বা চেয়ারম্যান এখানে আসেনি। এখনও আমরা অন্যের জমির উপর দিয়ে চলাচল করছি। তাতেও একটু বৃষ্টি হলে হাঁটুসম পানি জমে এবং কাদা হয়, চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হয়। সম্প্রতি জমির মালিকরা সতর্ক করেছেন তাদের জমির উপর দিয়ে যাতায়াত করতে দিবেন না। বাসিন্দারা বলেন, জমির মালিকরা তাদের জায়গা ঘিরে দিলে আমরা যাতায়াতের রাস্তা পাবো না এবং চরম বেকায়দায় পড়তে হবে। তাদের যাতায়াতের জন্য অবিলম্বে একটি রাস্তা করে দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন গুচ্ছগ্রামবাসী।
প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. আজিমুদ্দীন (ডাঙ্গর) নিজেই ৭৫ হাজার টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সেই টাকা থেকে কিছুটা মাটি কাটা হয়েছিল। স্থানীয়দের বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত কাজটি সমাপ্ত করা যায়নি। তাহলে টাকা কি হলো অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেব বলতে পারবে এবং সাক্ষাতে আসেন কথা হবে, আমি ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।
আধাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল কবির পল্টন বলেন, প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পর কাজ শুরু করা হয়ছিল। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে কাজটি শেষ করা যায়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, আমি এখানে যোগদানের অনেক আগেই এই কাজ হয়েছে। এব্যাপারে আমি তেমন কিছু জানি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান ছনি বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। কাজটি যেহেতু আমার যোগদানের পূর্বের তাই এবিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য নাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *