উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে শিক্ষক দম্পতি লাঞ্ছিত! ভিডিও ভাইরাল

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসে এক শিক্ষক দম্পতির ওপর শারীরিক লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক, ওয়ার্ডবয় ও অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ বিষয়ে ওই শিক্ষক দম্পতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাসনিম হোসাইন আরিফের নিকট শনিবার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

আক্রান্ত শিক্ষক দম্পতি হলেন, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক তাজিবুল হক এবং তাঁর স্ত্রী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজনীন।

জানা যায়, শিক্ষক দম্পতি বুধবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে তাজিবুল হকের রক্তচাপ পরিমাপ করাতে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রিফাত বিনতে জান্নাত লিয়া একজন রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে চেম্বারে গল্পে মগ্ন। তারা ভেতরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে অন্যায় মনে করে শিক্ষক দম্পতি ভেতরের একটি ছবি তুলে প্রতিবাদ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডা. লিয়া তার পরিচিত ওয়ার্ডবয় বাপ্পী, নাজমুল, সোহেল এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক ইমনকে ডেকে এনে তারা সবাই মিলে তাদের টেনে-হিঁচড়ে জরুরি বিভাগের ভেতরে নিয়ে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এরপর ঘটনাস্থলে ডা. লিয়ার স্বামী তামিম এবং মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক টিএইচএ ডা. বিজয় কুমার রায় উপস্থিত হয়ে তারা শিক্ষক দম্পতির বক্তব্য না শুনেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।

এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দ্রুতই তা ভাইরাল হয়ে যায়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষক সমাজ এবং সচেতন নাগরিকরা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং অভিযুক্তদের দ্রুত অপসারণ ও শাস্তির দাবি তুলেন। শিক্ষক তাজিবুল হক অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তার আমাকে চিকিৎসা দিলেও আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এ সসময় আমি প্রেসার মাপার কথা বলায় বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। আমাকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে তিনি কথা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ দৃশ্য মোবাইলফোনে ধারণ করতে গেলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং হেনস্তা করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ রিফাত বিনতে জান্নাত লিয়া বলেন, আমরা তাদের হেনস্তা করিনি বরং তারাই আমার সাথে অশালীন আচরণ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাসনিম হোসাইন আরিফ বলেন, ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে স্থানীয় শিক্ষক, নাগরিক ও সমাজ কর্মীদের দাবি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নামতে বাধ্য হবেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *