আনিসুর রহমান, সোনারগাঁ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের জৈনপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক অবৈধ চুনা ফ্যাক্টরি, যেখানে কোনো ধরনের সরকারি অনুমোদন ছাড়াই প্রতিনিয়ত উৎপাদন চলছে। এসব ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনিক তৎপরতার অভাবে দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব অবৈধ ফ্যাক্টরি বেআইনিভাবে তিতাস গ্যাসের সংযোগ ব্যবহার করছে, যার ফলে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়ে যাচ্ছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও, কিছু প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই পুনরায় সংযোগ চালু হয়ে যায়। এতে প্রশাসনের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,প্রতিবার অভিযান চালিয়ে গ্যাস লাইন কেটে দেওয়া হয়, কিন্তু পরদিনই আবার চালু হয়ে যায়। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় হচ্ছে, আর সরকারের রাজস্বের বড় ক্ষতি হচ্ছে। আমরা এসব অবৈধ ফ্যাক্টরির গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্নের দাবি জানাই।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এসব চুনা ফ্যাক্টরির বিষাক্ত ধোঁয়া ও ধূলিকণায় ফসল ও গাছপালা নষ্ট হচ্ছে, বাতাসে ছড়াচ্ছে মারাত্মক দূষণ। শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালাপোড়া এবং চর্মরোগ বেড়ে গেছে।
পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, “এভাবে অবৈধভাবে চুনা উৎপাদন চলতে থাকলে সোনারগাঁয়ের পরিবেশ, কৃষি ও জনস্বাস্থ্যের ভয়াবহ ক্ষতি হবে।”
এদিকে, এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেন,
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে এসব অবৈধ চুনা ফ্যাক্টরি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সোনারগাঁয়ের জনগণ এখন অপেক্ষায়—প্রশাসন কি অবশেষে এই অবৈধ ফ্যাক্টরি চক্রের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেবে, নাকি আগের মতোই সব কিছু ‘অভিযানের নাটক’ হিসেবেই থেকে যাবে?