চিড়িয়াখানাকে শুধু রাজস্ব বা বিনোদনের মানদণ্ড ভাবা উচিৎ হবে না-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

শুভদিন অনলাইন রিপোর্টার:

চিড়িয়াখানায় প্রাণিগুলোর প্রতি মানবিক আচরণ করা হয় না উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জাতীয় চিড়িয়াখানাকে শুধু রাজস্ব বা বিনোদনের মানদণ্ড ভাবা উচিৎ হবেনা। চিড়িয়াখানা দেশের বিশেষ পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।

আজ সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হলরুমে ‘বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা’ -শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, চিড়িয়াখানা এখন যে সংকটের মধ্যে রয়েছে—তার সমাধান কোনো একক ব্যক্তি, এমনকি ডিজি বা পরিচালক একা চাইলে করাও সম্ভব নয়; কারণ এ সমস্যা বহু বছর ধরে চলে আসছে। তাই অধিদপ্তর, চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “আজ অনেক পরামর্শ পাওয়া গেছে যা নিজেরা মিটিং করলে হতো না। আমরা আগামীতে এমন একটি কমিটি করবো যেখানে সব শ্রেণির অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে প্রতি মাসে সবাই বসে চিড়িয়াখানার উন্নয়নে কী কী করা যায় তা নির্ধারণ করা হবে।”

উপদেষ্টা বলেন, চিড়িয়াখানার প্রাণীদের সংরক্ষণ পরিকল্পনা শুধু চিড়িয়াখানার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক নয়। কোন কোন প্রাণীকে উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে স্থানান্তর করা যায় কি না—সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে। তিনি বলেন , যেসব প্রাণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে—সেগুলোকে চিড়িয়াখানায় রাখব কি না বা অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে কি না— সে বিষয়েও আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, অনেক সময় বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানার প্রাণীদের নিয়ে গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করে। তিনি আরো বলেন, প্রাণীকে গবেষণার জন্য বাইরে পাঠানো হবে না। যদি গবেষণা করতে হয়, তবে গবেষকদের চিড়িয়াখানায় এসে—সেখানকার পরিবেশের মধ্যেই গবেষণা করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট প্রাণীগুলোকে যেভাবে রাখার দরকার তা আমরা করতে পারছিনা। এর বড় কারণ পর্যাপ্ত জনবলের অভাব। আজকের এ কর্মশালা থেকে যে প্রস্তাবগুলো আসবে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তৃতা করেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান। মূলপ্রবন্ধ উপস্হাপন করেন চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার। মূলপ্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর  ডা. এ বি এম শহীদ উল্লাহ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *